গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)প্রতিনিধি :৮০তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অধ্যাপক যতীন সরকার বলেন, একজন মনোবিজ্ঞানী বলেছিলেন, রবীন্দ্রনাথ সারা জীবন বেঁচে ছিলেন। মানুষ জীবিত থাকে অনেকেই, কিন্তু বেঁচে থাকে খুব কম মানুষ। জীবনের শেষ পর্যন্ত এমন কথা কেউ বলতে পারবে না তিনি যেখান থেকে শুরু করেছিলেন তার পিছনে চলে গেছেন, তা কেউ বলতে পারবে না। প্রতিনিয়ত সামনের দিকে গেছেন।

আমিও বেঁচে থাকতে চাই। রবীন্দ্রনাথ ৮০বছর পরার আগেই বারবার একটা কথা বলতেন, আমার যে বয়স হয়েছে, আমার কাজ প্রিয় হওয়া নয়, আমি সত্য হতে চাই। রবীন্দ্রনাথের কথা আমি সবসময় স্মরণ করি, রবীন্দ্রনাথ সত্যিকার অর্থে শুধু কবি গুরু নন, তিনি সকলের গুরু, এমনকি যারা নিজেদেরকে মার্কসবাদী বলে, তাদেরও গুরু রবীন্দ্রনাথ, যেমন গোপাল হালদার অত্যন্ত বড় মাপের একজন মার্কসবাদী বুদ্ধিজীবী ছিলেন। বাংলাদেশে আসার পর জিজ্ঞাস করা হলো, আপনি মার্কসবাদ শিখছেন কার কাছ থেকে, তখন তিনি বললেন রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে, তারপরে বললেন বিবেকানন্দের কাছ থেকে, এরপরে বললেন সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। এখানে একটি পত্রিকায় লেখা হলো রবীন্দ্রনাথের নিকট যে মার্কসবাদ শিখে সে যে কি রকম মার্কসবাদী তা বুঝাই গেল! কিন্তু তারা জানে না, যে একজন কবির কাছ থেকে, একজন জ্ঞানি মানুষের কাছ থেকে কি শিক্ষা গ্রহণ করা যেতে পারে। কাল মার্কস নিজে যখন, ঠেকে যেতেন বিভিন্ন সময় সম্পর্কে তখনই তিনি সেক্সপিয়ার খুলতেন, গ্যাটে খুলতেন, খুলে তার মধ্যে তিনি ওই তার যে সন্ধান পেয়ে যেতেন।

শিক্ষাবিদ, গবেষক, সাহিত্যিক অধ্যাপক যতীন সরকারের ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) ময়মনসিংহের গৌরীপুরে আলোচনা সভা, র‌্যালি ও যতীন স্যারের সান্নিধ্য, ফুলেল শুভেচ্ছা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। নেত্রকোণার বানপ্রস্থে যতীন সরকার এর ৮০তম জন্মদিন উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে জন্মদিন অনুষ্ঠানে গৌরীপুর প্রেসক্লাব ও যুগান্তর স্বজন সমাবেশের পক্ষ থেকে তাঁকে ফুলের শুভেচ্ছা জানানো হয়। কেক কেটে ও স্যারের সান্নিধ্য নিয়ে দীর্ঘ সময় কাটায় স্বজনরা।

নেত্রকোনার বানপ্রস্থে অনুষ্ঠিত যতীন সরকার এর ৮০তম জন্মদিন উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মোস্তফা কামাল এর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নিয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান নেত্রকোনা পৌরসভার মেয়র প্রশান্ত রায়, অধ্যাপক বিধান মিত্র, ডাঃ আব্দুল হামিদ, কবি আল আজাদ, শচীন আইচ, মদন পৌরসভার মেয়র দেওয়ান মোদাচ্ছের হোসেন, জেলা উদীচী সভাপতি মোজাম্মেল হক বাচ্চু, মোঃ খায়রুল হক, ময়মনসিংহ জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক এড, এমদাদুল হক মিল্লাত, যতীন সরকারের সহধর্মিনী কানন বালা সরকার, সারোয়ার কামাল রবিন, অচিন্ত মজুমদার টুটু, রাজিব সরকার, অধ্যাপক উপেন্দ্র সরকার, অধ্যাপক মিল্টন ভট্টাচার্য, ড. রমা বিজয়, মোস্তাফিজুর হমান খান, প্রফেসর শফিকুল ইসলাম, যুগল কিশোর তালুকদার, দীপক সরকার, ছড়াকার স্বপন ধর, বিশিষ্ট লেখক রণজিৎ কর, গৌরীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুল ইসলাম মিন্টু, যুগান্তর প্রতিনিধি ও স্বজন উপদেষ্টা মোঃ রইছ উদ্দিন, অধ্যাপক সহীদুর রহমান প্রমুখ। সংগীত পরিবেশন করেন নূরু বাউল, উদীচী জেলা সংসদ, কুন্তল বিশ্বাস সংগীত বিদ্যায়তন, জাতীয় রবীন্দ্র সম্মিলন পরিষদ, জেলা শাখার শিল্পীবৃন্দ। অখিল পালের নির্মিত বানপস্থে যতীন সরকারের একটি ভাস্কর্য উম্মোচন করা হয়।

(এসআইএম/এসসি/আগষ্ট ২০,২০১৫)