পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি: পীরগঞ্জে বড় আলমপুর ইউনিয়নকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাল্য বিয়ে মুক্ত ঘোষণা করা হলেও ইউনিয়নটিতে অপ্রতিরোধ হয়ে উঠেছে বাল্য বিয়ে।

বৃহষ্পতিবার রাতে ৫ম শ্রেনীর ছাত্রী আসমা খাতুনের বিয়ে হয়েছে। এর আগে ৫ জনের বাল্য বিয়ে হয়েছে। ইউনিয়নটির নিকাহ রেজিষ্ট্রার শাহজাহান আলী বরাবরই বাল্য বিয়ে রেজিষ্ট্রি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, ১২ বছর বয়সের আসমা খাতুন। সে উপজেলার বড়আলমপুর আবুল হোসেন দাখিল মাদ্রাসার ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী। বৃহষ্পতিবার রাতে তার বিয়ে হয়। সে বড়আলমপুর ঢেঁকিরপাড়া গ্রামের মহির উদ্দিনের কন্যা। রায়পুর ইউনিয়নের সাতগড়া গ্রামের আসমত উল্লাহর পুত্র আরিফুল ইসলামের সাথে ৫০ হাজার ১ টাকা দেনমোহরে তার বিয়ে হয়। বিয়ের মৌলভী ছিলেন কৈগাড়ী গ্রামের আব্দুল খালেক মিয়া।

এর আগে ইউনিয়নটির রাজারামপুর গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের কন্যা জাফরপাড়া দারুল উলুম কামিল মাদ্রসার ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী রেশমা খাতুন, একই গ্রাম ও ওই মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী রোমানা আক্তার, রাজারামপুর গ্রামের তাহের মিয়ার কন্যা রাজারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী তাহেরা খাতুন এবং কুমারগাড়ী গ্রামের নালু মিয়ার কন্যা কুমারগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী নাহিদা খাতুনের বাল্যবিয়ে হয়।

উল্লেখিত বিয়েগুলোর রেজিষ্ট্রি সম্পন্ন করেন বড়আলমপুর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিষ্ট্রার শাহজাহান আলী।

ওই ইউনিয়নের এক মাদরাসার সুপার নাম প্রকাশ না করার শর্তে অক্ষেপ করে বলেন- চলতি বছরেই তার মাদরাসার ১৫/২০ জন ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। নিকাহ রেজিষ্টার শাহ্জাহান আলী বরাবরের মতোই দায় এড়িয়ে বলেন- সব বিয়ে আমি রেজিষ্ট্রি করি না।

সংশ্লিষ্ট ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান বলেন- গত ৪ আগষ্ট আমার ইউনিয়নটি বাল্য বিয়ে মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তাছাড়া আমি অপ্রাপ্ত বয়সের কোন মেয়ের জন্য জন্ম নিবন্ধন দেই না। তবে জেনেছি, জন্ম সনদ জালিয়াতি করা হচ্ছে। কোন কোন ক্ষেত্রে এফিডেভিট করেও বিয়ে রেজিষ্ট্রি করা হচ্ছে। উপজেলা নিকাহ রেজিষ্ট্রার সমিতির সাধারন সম্পাদক আব্দুল হালিম মিয়া বলেন- যারা বাল্য বিয়ের সাথে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

উল্লেখ্য, গত ৪ আগষ্ট আনুষ্ঠানিকভাবে উপজেলার বড় আলমপুর ইউনিয়নকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা করা হলেও ওই ইউনিয়নে থেমে নেই বাল্যবিয়ে।

(জিকেবি/এলপিবি/আগস্ট ২২, ২০১৫)