গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে গত ৫ দিনের অবিরাম বর্ষণে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ। এছাড়া কৃষি ও মৎস্য চাষে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

জানা যায়, গত বুধবার সন্ধ্যায় থেকে শনিবার পর্যন্ত টানা বর্ষণে উপজেলার সদর (দহবন্দ) বামনডাঙ্গা, সোনারায়, তারাপুর, বেলকা, সর্বানন্দ, রামজীবন, ধোপাডাঙ্গা, ছাপড়হাটী, শান্তিরাম, হরিপুর কঞ্চিবাড়ি, শ্রীপুর, চন্ডিপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ মৌজায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ।

এসব এলাকায় ডুবে গেছে রোপা আমন ক্ষেত, বীজতলা, শাক-সবজিসহ তরকারি জাতীয় সকল ক্ষেত। পুকুর ডুবে যাওয়ায় মাছ চাষিরাও ক্ষত্রিগ্রস্ত হয়েছেন। পানিবন্দী এলাকাগুলোতে পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় গৃহপালিত পশুর খাদ্য বিনষ্ট হয়েছে। এছাড়া নদ-নদী গুলোতে বিপদ সীমার উপরে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। দেখা দিয়েছে কয়েকটি স্থানে ব্যাপক নদী ভাঙ্গন। হুমকির মুখে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধসহ তিস্তা বাজার ও বিভিন্ন স্থাপনা। এছাড়া হাজার হাজার হেক্টর জমির সদ্য রোপনকৃত আমন ক্ষেত, বীজতলা, সবজিক্ষেত, পানের বরজ পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

তিস্তা নদীর পানি বিপদ সীমার ৫ সে. মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিভিন্ন গ্রাম, পাড়া-মহল্লা ও হাট-বাজার তলিয়ে গেছে। এতে শতাধিক মৎস্য খামার ও পুকুরের কোটি টাকার মাছ পানির তোড়ে ভেসে গেছে। নদী ভাঙ্গনে রামডাকুয়া, হাজারীর হাট, লালচামার বাজার, পাড়াসাদুয়া, কানিচরিতাবাড়ি, চরচরিতাবাড়ি, ছয়ঘড়িয়া, বোচাগাড়িসহ ২০টি স্থান হুমকির মুখে পড়েছে। ওই সব এলাকার শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল হাই মিলটন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নুরন্নবী সরকার বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে পানিবন্দি মানুষদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপনের ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। পানিবন্দী মানুষেরা আশ্রয় খুঁজে না পাওয়ায় গবাদি পশু, হাঁস-মুরগীসহ বেড়িবাঁধ ও উচু স্থানে গাদাগাদি করে অবস্থান করছেন। পানিবন্দী মানুষজনের মাঝে দেখা দিয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র, খাদ্য সামগ্রীসহ বিশুদ্ধ পানীয়-জলের তীব্র সংকট। উপজেলা প্রশাসন দুর্গত বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ সামগ্রীর আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন।

(আরআই/এলপিবি/আগস্ট ২৩, ২০১৫)