নওগাঁ প্রতিনিধি : রবিবার ভোরে নওগাঁর আত্রাইয়ে ‘আত্রাই’ নদীর বেড়ী বাঁধের ২টি স্থান ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে এলাকার শতশত বিঘা জমির ফসল। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। বসতবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় বিভিন্ন উঁচু জায়গায় খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে বেশ কিছু পরিবার। রবিবার সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে জেলার ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। রবিবার ভোররাতে আত্রাই উপজেলার ছোট যমুনা নদীর তীরবর্তী ফুলবাড়ী বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ এবং আত্রাই নদীর ভরতেঁতুলিয়াতে বেড়ী-বাঁধ ভেঙ্গে যায়। এ ২টি স্থানে বাঁধ ভাঙ্গার ফলে শতশত বিঘা জমির ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, রবিবার দুপুরে আত্রাই নদীর পানি ধামইরহাটের শিমুলতলী পয়েন্টে বিপদসীমার ৫১ সে.মিটার, মান্দার জোতবাজার পয়েন্টে ৭৩ সে. মিটার এবং আত্রাই পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সে. মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। শহরের ছোট যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও বিপদ সীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এদিকে নদীর পানি বৃদ্ধি ও বাঁধ ভাঙ্গার ফলে প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে আত্রাই উপজেলার ফুলবাড়িয়া, উদনপৈ, মিরাপুর, জাতপাড়া, কুমঘাট, জাতআমরুল জিয়ানীপাড়া, ভরতেঁতুলিয়া, কাশিয়াবাড়িসহ বিভিন্ন গ্রামের বেশকিছু পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে সরকারী রাস্তায় বা উঁচু কোন স্থানে আশ্রয় নিয়ে খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ভরতেঁতুলিয়া গ্রামের জাহানারা বানু বলেন, ‘বাঁধ ভেঙ্গে আমাদের থাকার ঘরে আকষ্মিক পানি ঢুকে পড়ায় অনেক আসবাবপত্রও আমরা ঘর থেকে বের করতে পারিনি’। এদিকে ২টি স্থানে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় আত্রাই-নওগাঁ ও আত্রাই-পতিসর পাকা সড়ক হুমকির সম্মুখিন হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসি ও স্থানীয় প্রশাসন যৌথভাবে এ সড়ক দু’টি রক্ষার প্রানপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সংবাদ পেয়ে আত্রাই উপজেলার চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম পাটোয়ারী ভাঙ্গনস্থল ও প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

এব্যাপারে নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ এখনো ভাঙ্গেনি। তবে আত্রাইয়ে যে দু’টি বাঁধ ভেঙ্গেছে সে দু’টি বাঁধ ইউনিয়ন পরিষদের নিয়ন্ত্রনাধীন গ্রামীণ রাস্তা বা বেড়ী বাঁধ। বাঁধ ভাঙ্গা খবর পেয়েই তিনি ভাঙ্গনস্থল পরিদর্শন করেছেন।

(বিএম/পি/অাগস্ট ২৩, ২০১৫)