মাদারীপুর প্রতিনিধি :উজান থেকে বন্যার পানি নেমে আসায় মাদারীপুর জেলার নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধির সাথে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন। গত ৪ দিনে আড়িয়াল খাঁ নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক রক্ষা বাঁধের শিবচর অংশের ১শ মিটার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে দেশের গুরুত্বপুর্ণ মহাসড়কের বিশাল অংশ চরম ঝূঁকিতে রয়েছে। একই সাথে উত্তর বহেরাতলায় নতুন করে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ দিনে আড়িয়াল খাঁ, কুমার নদ ও পালরদী নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পানির তোড়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক রক্ষা বাধের মাদারীপুরের শিবচরের দত্তপাড়া অংশের ১শ মিটার বাঁধ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন এলাকা থেকে মহাসড়ক মাত্র ১৫০ মিটার দূরত্বে চরম ঝূঁকিতে রয়েছে। বাঁধের ১শ মিটার ছাড়াও সংলগ্ন বেশকিছু ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ভাঙ্গনের তীব্রতা অনেক বেশি হওয়ায় ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় আতংক দেখা দিয়েছে।

অপরদিকে শিবচর উপজেলার ৭টি গ্রামে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙ্গনে প্রায় ২ শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

শিবচরের চরজানাজাত, নিলখী, দক্ষিণ বহেরাতলা, উত্তর বহেরাতলা, শিরুয়াইল, দত্তপাড়া ও সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের ৭টি গ্রামের ২ শতাধিক পরিবারের প্রায় ৩‘শ একর ফসলী জমিসহ ভিটেবাড়ি, গাছ-পালা সম্পূর্ণ নদীগর্ভে চলে গেছে। নদী ভাঙ্গনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ নিলখী ইউনিয়নের চরকামার কান্দি, শিকদার কান্দি, দত্তপাড়া ইউনিয়নের বাজেহারচর, সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের পূর্ব সন্ন্যাসীরচর, বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের ছোট টেকেরহাট ও উত্তর বহেরাতলার সেনেরবাট গ্রামের মানুষ।

নিলখী ইউনিয়নের চরকামারকান্দি গ্রামের নদীগর্ভে বিলীন হওয়া ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের আনোয়ার চৌকিদার বলেন, “আমার সাজানো-গোছানো ভিটে বাড়ি ও ৬ বিঘা ফসলী জমি আড়িয়াল খাঁ গ্রাস করেছে। আমি এখন পরিবার পরিজন নিয়ে সর্বশান্ত। বেঁচে থাকার মত আমার আর কোন সম্বল বাকি নেই”।

মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহাদাত হুসাইন চৌধুরী বলেন, “মহাসড়ক সংলগ্ন বাঁধের ভাঙ্গন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে এখানে কাজ শুরু করা দরকার। তা না হলে মহাসড়ক ঝুঁকিতে পড়বে”।

এদিকে বুধবার বিকেলে শিবচরের নদীভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খান।

ভাঙ্গনের তীব্রতা দেখে মন্ত্রী শংকা প্রকাশ করেন এবং এলাকায় বসেই জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন।

এসময় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক রক্ষা বাধ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক রক্ষা বাধের আড়িয়াল খা নদের ভয়াবহ ভাঙ্গনের কারনে মহাসড়ক ও হাজী শরিয়তউল্লাহ সেতু হুমকির মুখে রয়েছে। তাই তিনি দ্রুত কাজ করার নির্দেশ দেন।

(এএসএ/এসসি/অঅগস্ট২৮,২০১৫)