পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধি : পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৬ ডাক্তারের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়ায় তারা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচও) গালমন্দ করার পর অফিস কক্ষে ঘন্টাব্যাপী অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে উদ্ধার করেছে। শুক্রবার সকালে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোজাম্মেল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হাজিরা খাতা নিয়ে গেছেন।

জানা গেছে, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সার্জারী, গাইনী, চক্ষু, কার্ডিওলজি, অর্থপেডিক্স, মেডিসিন বিশেষজ্ঞসহ ৩০ জন ডাক্তার কর্মরত থাকলেও অধিকাংশ ডাক্তার মাসে ৩/৪ দিন কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে হাজিরা খাতায় পুরো মাসের স্বাক্ষর করে। ডা. শাহীনুর (সার্জারী), ডা. সুফিয়া খাতুন (গাইনী), ডা. হরিহর প্রসাদ গুপ্তসহ বেশ কয়েকজন ডাক্তার কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে প্রায়ই মন কসাকসি হয়। সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ও পরিচালক (প্রশাসন) এবং জেলা সিভিল সার্জনও উল্লেখিত ডাক্তারদেরকে অনুপস্থিত দেখে হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। একপর্যায়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গত ২৫ আগষ্ট ১৩৯০.১৩৯১.১৩৯২/১(৩)- নং স্মারকে ডা. শাহীনুর (সার্জারী), ডা. সুফিয়া খাতুন (গাইনী), ডা. হরিহর প্রসাদ গুপ্তকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও ২৭ আগষ্ট (বৃহষ্পতিবার) ১৪১২/১(৯) নং স্মারকে বেতন স্থগিতের নোটিশ প্রদান করলে ইউএনও এসএম মাজহারুল ইসলাম কমপ্লেক্সে আসেন। তিনি চলে যাওয়ার পর বৃহষ্পতিবারই উল্লেখিত ৩ ডাক্তারের সাথে ডা. এনামুল বাসার, ডা. শরিফুল ইসলাম এবং ডা. আতাউর রহমান ৬ জন জোটবদ্ধ হয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সৈয়দা আফরোজা বেগমকে গালমন্দ করে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে। ঘন্টাব্যাপী অবরুদ্ধ থাকার পর অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী তাকে উদ্ধার করে। শুক্রবার সকালে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোজাম্মেল হক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শসে এসে ডাক্তারদের হাজিরা খাতা নিয়ে গেছেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনাকে অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয়ে ডা. এনামুল বাসার, ডা. শরিফুল ইসলাম এবং ডা. আতাউর রহমান জানায়, উনি (ইউএইচও) আমাদের কাছে মাসোহারা দাবি করায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৈয়দা আফরোজা বেগম বলেন, উল্লেখিত ডাক্তাদের অনুপস্থিতের ব্যাপারটা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানেন। কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই তাদেরকে কারণ নোটিশ দেয়ায় আমার কক্ষে এসে তারা ‘হট টকিং’ করেছে। তিনি অবরুদ্ধ হওয়ার কথা এড়িয়ে যান। তাদের সাথে আমার কোন টাকা-পয়সার লেনদেন নাই। সিভিল সার্জন ডা. মোজাম্মেল হক বলেন- পীরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উল্লেখিত অনুপস্থিত ডাক্তারদের ব্যাপারে আমি জানি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছে।

(জিকেবি/পি/অাগস্ট ২৮, ২০১৫)