স্পোর্টস ডেস্ক : শারীরিক প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আইসিআরসি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পর্দা উঠবে বুধবার। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সকাল ১০টায় পাঁচ জাতির এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত থাকবেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী শ্রী বিরেন শিকদার, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও আইসিআরসি’র হেড অব ডেলেগেশন (বাংলাদেশ) ক্রিস্টিন চিপোলো।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সকাল ১১টায় উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড। টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী বাকি তিনটি দল হলো: ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। ০২ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে পাঁচ জাতির এই টুর্নামেন্ট। উদ্বোধনী ম্যাচ ছাড়া বাকি ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে বিকেএসপির মাঠে।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, বিসিবি ও বিকেএসপির সার্বিক সহযোগিতায় টুর্নামেন্টটি আয়োজন করছে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেডক্রস (আইসিআরসি)।

টুর্নামেন্ট উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আইসিআরসি। এতে উপস্থিত ছিলেন আইসিআরসি’র হেড অব ডেলেগেশন (বাংলাদেশ) ক্রিস্টিন চিপোলো, আইসিআরসি’র ফিজিক্যাল রিহ্যাবিলিটেশন প্রোজেক্ট ম্যানেজোর গার্ড ভ্যান ডে ভ্যালডে, বিসিবি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক ও টুর্নামেন্টের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর মাশরাফি বিন মর্তুজা।

এ সময় আয়োজকরা টুর্নামেন্টের সাফল্য কামনা করেন। শারীরিক প্রতিবন্ধীরাও যে সমাজের মূলধারার বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিতে পারে তার দৃষ্টান্ত হতে পারে এই টুর্নামেন্ট। খেলাধুলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সামাজিক অবমাননা, কুসংস্কার ও বৈষম্য কমিয়ে আনা যাবে বলে মত দেন আয়োজক ও আগত অতিথিরা।

এর পর ট্রফি উন্মোচণ পর্বে অংশ নেন টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী পাঁচ দেশের অধিনায়ক। বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করবেন আলম খান। শিরোপা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী আলম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘যদিও আমাদের ক্যাম্প শুরু হয়েছে বেশি দিন হয়নি। মাত্র ৩-৪ মাস। তারপরও আমরা শিরোপা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। আমাদের দলটিও ব্যালেন্সড। সবটুকু চেষ্টা দিয়েই আমরা মাঠে খেলব।’

বাংলাদেশ দল গঠনের পটভূমি:
২০১৪ সালের শুরুর দিকে বাংলাদেশ শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দল গঠনের প্রয়াসে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, বিকেএসপি ও বিসিবি’র সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা করে আইসিআরসি। যার ফলশ্রুতিতে গত বছরের নভেম্বরে বিসিবি, ব্রিটিশ হাই কমিশন এবং ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্রিকেট নিয়ে জাতীয় সেমিনার ও দুই দিনের ট্রেনিং ওয়ার্কশপ করা হয়।

ওই সময়ে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার এমন- খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তা ও ফিজিওথেরাপিস্টরা শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্রিকেট সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। ইংল্যান্ড ডিজেবল ক্রিকেট ম্যানেজার ও শারীরিক ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ ইয়ান মার্টিন ও কোচ কাসিম আলী এই ট্রেনিং ওয়ার্কশপ পরিচালনা করেন।

বাংলাদেশ শারীরিক প্রতিবন্ধী দল গঠনে গত ২ থেকে ৪ মার্চ বিসিবি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, বিকেএসপি ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সঙ্গে যৌথভাবে ‘প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচি’ আয়োজন করা হয়। সারা দেশ থেকে ১৪৯ জন আগ্রহী ও প্রতিভাবান তরুণ এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। এদের মধ্য থেকে ২৬ জনকে নির্বাচন করা হয় যারা বিকেএসপির কোচদের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন দফায় অনুশীলনে অংশ নেয়। সেখান থেকে ১৮ জন ক্রিকেটার চূড়ান্ত দলে ঠাঁই পান।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৫)