নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দা উপজেলার কাশোঁপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ইয়াদ আলী মন্ডলের অপসারন দাবী করেছেন ওই ইউনিয়নের ৩ নারী সদস্যসহ ১০ মেম্বার।

ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াদ আলী মন্ডলের অনিয়ম, দূর্নীতি আর সরকারী অর্থ লুটপাট এবং মেম্বারদের পাওনা ভাতা না দেয়ার ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে এমন দাবী করেছেন তারা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউএনও, জেলা প্রশাসকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

ওই ইউনিয়নের নারী সদস্য নাদিরা বেগম, হাসিনা বেগম, বেনু বেগম এবং পুরুষ সদস্য আবুল হোসেন, দেওয়ান মজিবর রহমান, আবেদ আলী, আফছার আলী, সাহাবুদ্দিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও রইচ উদ্দিন, এই ১০ মেম্বারের স্বাক্ষরিত অভিযোগে জানা যায়, বিগত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান মোঃ ইয়াদ আলী মন্ডল ক্ষমতা পাওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদ বরাবর সরকারের বরাদ্দকৃত এলজিএসপি, কাবিখা, টিআর, এডিপিসহ বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ, গম ও চাল সরকারের নীতিমালা উপেক্ষা করে আত্মসাত করে চলেছেন। এছাড়া নারী সদস্য নাদিরা বেগমের স্বাক্ষর জাল করে এলজিএসপির সাড়ে ৭ লাখ টাকার চেক জালিয়াতির মাধ্যমে চেয়ারম্যান ইয়াদ আলী ইউপি সচিব ইউনুস আলীর যোগসাজসে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। আর এভাবে ভূয়া প্রকল্প, ভুয়া কমিটি ও ভুয়া রেজুলেশনের মাধ্যমে লাখ-লাখ টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন।

এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের পুকুর, খোয়ার, মৌসুমী ফল আম কাঁঠাল গাছ প্রকাশ্য ডাক না দিয়ে চেয়ারম্যান তার অর্থ নিজেই আত্মসাৎ করেন।

গ্রাম পুলিশে নিয়োগের ব্যাপারে গ্রামের বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে এখন তিনি টালবাহানা শুরু করেছেন। এসব অর্থ বা প্রকল্পের কথা নির্বাচিত সদস্যরা জানতে চাইলে চেয়ারম্যান তাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ, প্রাণনাশের হুমকি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি প্রদান করেন বলে অভিযোগ।

মেম্বাররা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াদ আলী মন্ডল নিজেকে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের নেতা দাবী করে সরকার ও দলের স্বার্থ বিপন্ন করে এভাবে হতদরিদ্র সাধারণ মানুষের হক লুটপাট করছেন। তার অনিয়ম দূর্নীতির অপরাধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বিগত ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল তাকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে বরখাস্ত করেন। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে এক রীটের মাধ্যমে ২০১৩ সালের ১৩ জুন তিনি পুনঃদায়িত্বপ্রাপ্ত হন। এরপর থেকে তিনি সরকারী বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ লুটপাট ও আত্মসাতে মেতে উঠেছেন। এমনকি ইউপি সদস্যদের ভাতা বাবদ পাওনা প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা দীর্ঘদিনেও পরিশোধ করছেন না। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দফতরে তার দূর্নীতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল এবং তার বিরুদ্ধে দূর্নীতির মামলা চলমান থাকার পরেও শুধু নিজেকে ক্ষমতাসীন দলের লোক পরিচয় দিয়ে ক্রমেই তাঁর দুর্নীতি মাত্রা বেড়েই চলেছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই দূর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন মেম্বাররা।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াদ আলী মন্ডলের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে, তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মেম্বাররা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

(পিকেএস/এলপিবি/সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৫)