টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : অসময়ে যমুনায় ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ভাঙনের তীব্রতাও ব্যাপক আকার ধারন করেছে। গত ১৫ দিনের ভাঙনে ভূঞাপুরের গাবসারা ইউনিয়নের ৮টি গ্রামের প্রায় ৫০০ পরিবার গৃহহীন ও ১০০একর ফসলি জমি যমুনার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙ্গনকবলিত এইসব নিরীহ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ও জিনিসপত্রও সড়াতে পারছে না অর্থের অভাবে। এখন পর্যন্ত সরকারী কোন সাহায্য সহযোগিতা তাদের কাছে পৌছেনি।

সরেজমিনে জানা যায়, যমুনার ভয়াবহ ভাঙনে উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের চরবিহারী গ্রামের ৮০ টি, জুংগীপুর-রুলীপাড়া ১৫০, বেলটিয়া পাড়া ৫০, চাঁনগঞ্জ ৭৫, রেহাই গাবসারা ৭৫, রামপুর ৩০ এবং বিশ্বনাথপুর গ্রামের ২৫ টি পরিবার ১০০ একর ফসলি জমি যমুনার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রতিদিনই একের পর এক নতুন পরিবার গৃহহীন ও ফসলি জমি নদীতে হারিয়ে যাচ্ছে। ভাঙনের তীব্রতা এতোই বেশি যে লোকজন ঘর-বাড়ি সরানোর সময়ই পাচ্ছেনা। অসময়ে এমন ভাঙন দিশেহারা হয়ে পড়েছে তারা। ভাঙনের শিকার এসব এলাকার লোকজন বঙ্গবন্ধু সেতু রক্ষা গাইড বাধেঁর পাদদেশে ও খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

কেউ কেউ আবার আশ্রয় নিয়েছে আত্মীয়স্বজনের বাড়ি। তবে এখন পর্যন্তও সরকারের তরফ থেকে কোন সাহায্যের হাত বাড়ানো হয়নি। ভাঙনকবলিত চরবিহারী গ্রামের আবু সাঈদ (৯০), রুস্তম আলী (৮৫), রুলী পাড়া গ্রামের মর্তুজ ফকির (৮৫), বেলটিয়া পাড়া গ্রামের আমীর আকন্দ (৭৬), মজিদ আকন্দ (৭০, চাঁনগঞ্জ গ্রামের নুরাল হাজী (৭৪), তোরাফ হাজী (৭১),রেহাই গাবসার গ্রামের শামছু মির্জা (৭২), রামপুর গ্রামের জামাল মিয়া (৭০) বলেন, এই বয়সে ১৫-২০ বার করে বাড়ি সরিয়েছি, আর পারছিনা।

স্থায়ী কোন জায়গায় শান্তিতে মরতে চাই। স্থানীয় সংসদ সদস্য বিভিন্ন সময়ে ভাঙন ঠেকাতে পিংনা থেকে যোকার চর পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা এখন পর্যন্তও বাস্তবে রুপ নেয়নি। ভোটের সময় আসলে আমাদের কদর বাড়ে তারপর আর কেউ আমাদের খবর নেয়না। কেউ বাড়িয়ে দেয়না সহযোগিতার হাত। আমরা কার কাছে যাবো কোথায় থাকবো।

এবিষয়ে স্থানীয় সাংসদ খন্দকার আসাদ্জ্জুামানের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে।

ভাঙনের বিষয়ে গাবসারা ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ভাঙনের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সাহায্য আসলে তা ভাঙনকবলিতদের মাঝে পৌছে দেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.হেলালুজ্জামান সরকার বলেন, ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। এব্যাপারে একটি তথ্য জেলা পরিষদে পাঠানো হয়েছে। অনুদান হাতে পেলেই তা বিতরন করা হবে।

(এমএনইউ/জেএ/মে ২৪, ২০১৪)