সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : উন্নয়নের পাসওয়ার্ড আমাদের হাতেই’ স্লোগানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদ্বোধন করা হয়েছে দুই দিনব্যাপী ডিজিটাল মেলা। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় সদর উপজেলা পরিষদের আয়োজনে উপজেলা অডিটোরিযামে প্রধান অতিথি বিভাগীয় কমিশনার আব্দুস সামাদ ফেস্টুন ও শান্তি প্রতীক কবুতর  উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

প্রধান অতিথি বলেন, ইন্টারনেট আমাদের জীবনে গতি এনে দিয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন কোন স্বপ্ন নয়, বাস্তব। আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের কাজের গতি বাড়িয়ে দিয়েছে। যার ফলে এখন আর রানারের চিঠির অপেক্ষায় বসে থাকতে হয়না। ঘরে বসেই মানুষ দেশ-বিদেশে যখন ইচ্ছা তখনই আরেক জন মানুষের সাথে দেখতে ও কথা বলতে পারে। সব কিছুই সম্ভব হয়েছে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে। আর সেটাও সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য।

তিনি আরো বলেন, মানুষ পরিবর্তনের মূল কারিগর। মানুষ ইচ্ছে করলে সকল কিছু পরিবর্তন করতে পারে। তাজমহল সৃষ্টি হয়েছে মানুষের জন্য, সৃষ্টি করেছে মানুষ আবার পরিকল্পনাও করেছে মানুষ। জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা যত সময় না করতে পারবে ততক্ষন পৃথিবী এগোবে না, জাগবে না। তথ্য-প্রযুক্তি ব্যাবহার করে বাংলাদেশের ছেলে মেয়েরা ফ্রিল্যানসিং এর মাধ্যমে যে অর্থ উপার্জন করে তাতে পরিবেশের দুষন করেনা, কোন ক্ষতিও নেই। ইন্টারনেট আমাদের জীবন ও সমাজকে পরিবর্তন এনে দিতে পারে। এ জন্য তিনি দেশের সকলকে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের আহবান জানান।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ আব্দুল সাদীর সভাপতিত্বে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ লিয়াকত পারভেজ, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক আবু আহমেদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, সাতক্ষীরাতে আসতে পারাটা আমার জন্য আনন্দের বিষয়। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জননেত্রী শেখ হাসিনা গতকাল যে হাসি উজ্জল মুখ নিয়ে খুলনার মাটি থেকে হেলিকাপ্টারে উড়াল দিলেন তাতে মনে হয়েছে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষের জীবণে বোরাকের মত গতি দরকার। আর ইন্টারনেট হচ্ছে সেই গতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে ধাক্কা দিয়ে সেই গতি দেখিয়েছেন। মানুষই হচ্ছে সকল পরিকল্পনার মূল রুপকার। এছাড়া বাইরে রোদে পুড়ে কাজ করতে হয়না ঘরে বসেই অনেক টাকা আয় করা যায়। তাই বেশি বেশি করে এর ব্যবহার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের ঘরে ঘরে পৌছে দিতে হবে। সব মানুষের মধ্যে মেধা, প্রতিভা সবই আছে তাই এর ব্যাবহারে আগ্রহ হচ্ছে মুল বিষয়। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সাতক্ষীরায় সি,সি টিভি এবং আই ক্যামেরা বসানো হবে।

তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে সরকারি বেসরকারি সব কাজকে পানির মত সহজ করাই হচ্ছে ডিজিটাল মেলার মুল লক্ষ্য। আজ চীন, ভারত পৃথিবীর বাজার দখল করে ফেলেছে। আর সব কিছুই সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তির মাধ্যমে। নিজে না পারলে ছেলে মেয়েদের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যাবহার সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করাতে হবে। সবাইকে প্রযুক্তিতে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। তথ্য-প্রযুক্তিতে এগিয়ে গেলে একদিন আমরাও চীন, ভারতের মত বাজার দখল করতে পারবো। তাহলেই আমাদের সোনার বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচন জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বর্তমানে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। জেলায় এর সুফলে হাজিরা ব্যবস্থা, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম করা হয়েছে। ই ফাইলের মাধ্যমে সকল কাজ আমরা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পারছি। তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফরম পূরণ করতে আগে ২ দিন সময় লাগত, কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তির সুবাধে ১৫ মিনিটে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, গ্রামের মানুষ যাদের কাছে আলো নেই তারা দ্রুত ঘুমাতে যায়। এ জন্য শ্যামনগরে সোলার ভিলেজ স্থাপন করে তাদের কাজের গতি বাড়ানো হয়েছে। জেলায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে প্রশাসন কাজ করছে। কিন্তু আমাদের সকল অর্জন ধরে রাখতে হবে। এজন্য প্রযুক্তির ব্যাবহার আরো বাড়াতে হবে। তিনি সচেতনতার মাধ্যমে সকল অজ্ঞতা, কুসংস্কার দূর করার আহবান জানান।

সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সদর উপজেলা উপ-সহকারী শিক্ষা অফিসার মাসুদুর রহমান।

(আরকে/এএস/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৫)