লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি: আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে নড়াইলের লোহাগড়ার কুমড়ি গ্রামে বিবাদমান লতিফুর রহমান পলাশ সমর্থিত লোকজন ও বনি শেখ সমর্থিত লোকজনদের মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষে সৈয়দ ইলিয়াস আলী নিহতের জের ধরে এলাকায় চরম আতঙ্কিত অবস্থা বিরাজ করছে।

কুমড়ি গ্রামের পশ্চিম পাড়ার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য আসমা, রেখা, তাসলিমা, কনিকা, স্বর্ণা, শাহিনা, খাদিজা বেগম জানান, বনি শেখ সমর্থিত গ্রুপের কোটো শেখ, বালা শিকদার, শান্ত শেখ, সালাউদ্দিন, সুজা, খায়ের, বাবু, নয়ন, কচিসহ ২০/২৫ জনের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষ পলাশ গ্রুপ সমর্থিত লোকজনদের ওপর অন্যায়-অত্যাচার, নির্যাতন, বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট ও বিষ দিয়ে ঘেরের মাছ লুট করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে।

এ অবস্থায় পলাশ গ্রুপের মশিয়ার শেখ,মুকুল শেখ, জিয়ার শেখ, মিজান শেখ, আজানুর শেখ, মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব শেখ, ইলিয়াছ, ফিরোজ শেখ, খসরুল শেখ, লিটু, হাদিউজ্জামান, আনিস সরদার, রিয়াজুলসহ অর্ধ শতাধিক পরিবারের লোকজন গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। দিনের বেলায় মহিলারা বাড়ি থাকলেও সন্ধ্যার পর ভয় ও আতংকে রাতের বেলা তারা পাশ্ববর্তী গ্রামে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে ।

মঙ্গলবার সরেজমিনে কুমড়ি গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, অনেক বসতবাড়ি জনশূন্য হয়ে পড়েছে। ঘরে কোন মালামাল নেই। এসব বাড়ির গ্রীল ও দরজা খুলে নিয়ে গেছে। বাড়ি ঘরের সর্বত্র ভাঙচুর ও লুটপাটের চিহ্ন রয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্তরা আরো বলেন, সন্ধ্যা হলেই বনি শেখ সমর্থিত লোকজন রামদা ও হাসুয়া নিয়ে আমাদের পক্ষের অন্তত ২০/২৫টি বাড়িতে লুটপাট চালিয়ে ধান-চাল, পাট, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, নগদ টাকা, মোবাইলসহ বাড়ির সমস্ত আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে গেছে। হত্যাকান্ডের পর পলাশ সমথির্ত গ্রুপ এলাকা ছাড়া হওয়ার পর মাছের ঘেরে বিষ দিয়ে প্রায় ৭/৮ লক্ষাধিক টাকার বিভিন্ন প্রকার মাছ লুট করে নিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে সাবেক চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান পলাশ, শাহাদাৎ শেখ, বুলু শেখ, লিটন শেখ, নান্টু মোল্যা, ইমামুল শেখ, ইন্দাল মোল্যা, অলিয়ার, মিজানুর মোল্যা অন্যতম। এ ব্যাপারে বনি শেখ তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতা পরবর্তী কুমড়ি গ্রামে অন্তত ২৫টি হত্যাকান্ড সংঘঠিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ আগস্ট দু’পক্ষের সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষের গুলিতে সৈয়দ ইলিয়াস আলী নিহত হয়।

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ লুৎফর রহমান লুটপাটের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, হত্যাকান্ড পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এলাকায় অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।

(আরএম/এলপিবি/সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৫)