গাইবান্ধা প্রতিনিধি: ঘাঘট নদীর বন্যার পানির তোড়ে গোদারহাট সংলগ্ন গাইবান্ধা শহর রক্ষা সোনাইল বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের প্রায় ৮০ ফুট এলাকা মঙ্গলবার সকালে আকস্মিকভাবে ভেঙে যায়।

এতে গাইবান্ধা পৌর এলাকাসহ সদর উপজেলার খোলাহাটি, বোয়ালী, বাদিয়াখালী, রামচন্দ্রপুর, ফুলছড়ির উদাখালী, কঞ্চিপাড়া গজারিয়া এবং উড়িয়া ইউনিয়নের ৩২টি গ্রাম ব্যাপকভাবে বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে।

ওই সব এলাকার কয়েক হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন, বীজতলা, শাকসবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে এবং মাছের খামারের পুকুরগুলো উসলে চাষকৃত সব মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এই অসময়ে বাঁধ ভাঙা পানিতে আমন ধান ও বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় আর কোন চাষের সুযোগ না থাকায় কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েছে। মাছ চাষিরাও পড়েছে চরম বিপাকে।

বন্যা কবলিত অসহায় মানুষ ধান, চাল বা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ হাঁস-মুরগি ও গর“-ছাগল নিয়ে দ্রুত বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে আশ্রয় নিয়ে খোলা আকাশের নিচে এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে।

খোলাহাটি ইউপি চেয়ারম্যান জানান, ঘাঘট নদী থেকে ট্রাক্টর দিয়ে বালু তোলার জন্য বাঁধ কেটে রাস্তা তৈরী করে এক শ্রেণির প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়িরা আইনের তোয়াক্কা না করেই দীর্ঘদিন থেকে বালু উত্তোলন করে আসছিল। গুরুত্বপূর্ণ এই শহর রক্ষা বাঁধটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এ বিষয়ে একাধিকবার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও তারা বাঁধ সংস্কার এবং উন্নয়ন বা বালু উত্তোলন বন্ধে কোন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের চরম গাফলতি খাম খেয়ালীর কারণেই ঘাঘটের পানি বৃদ্ধি পেলে বাঁধ চুইয়ে পড়ে বাঁধটি ভেঙে যায়।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আউয়াল বলেন, সোনাইল বাঁধ অন্যান্য বাঁধের তুলনায় অনেক শক্তিশালী। বাঁধটি দিয়ে পানি চুইয়ে পড়ছিল। কিন্তু বিষয়টি তাকে না জানানোর ফলে আকস্মিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। এদিকে পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে বা জরুরী ত্রাণ সহায়তা প্রদানে তাৎক্ষনিক সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা সমূহের কোন ত্রাণ তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড আরও জানায়, মঙ্গলবার ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি কিছুটা হ্রাস পেলেও এখনও ব্রহ্মপুত্র বিপদসীমার ৪৬ সে.মি. এবং ঘাঘট বিপদসীমার ৩৪ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে করতোয়া ও তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলেও বিপদসীমার সামান্য নিচে রয়েছে।

(আরএই/এলপিবি/সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৫)