শাহজাদপুর থেকে আতাউর রহমান পিন্টু : গত ২৪ ঘন্টায় উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণের কারণে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পৌর সদরসহ ১৩ টি ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

প্রতিদিন নদ নদীর পানি বাড়ায় স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, পাকা সড়ক, হাট-বাজার, ফসলী জমি, গরুর বাথান, গোচারণ ভূমি ও অসংখ্য বাড়ি-ঘর বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ। বাড়ি-ঘর ডুবে যাওয়া মানুষজন আশ্রয় নিয়েছে উঁচু স্থানে ও সড়কের উপরে। উপজেলার অর্ধ শতাধিক গরুর বাথান ও ৫ হাজার একর গোচারণ ভূমি বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় কাঁচা ঘাসের অভাব এ এলাকার লক্ষাধিক গবাদি পশুর খাদ্যাভাব তীব্র আকার ধারন করেছে ।

উপজেলার শতাধিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রসা বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রীর পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। এদেরকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে উঁচু স্থান, বাড়ির ভিটা ও মসজিদের বারান্দায় পাঠদান করা হচ্ছে। বন্যা কবলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারিভাবে এখনও ছুটি ঘোষণা না করায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডিঙ্গি নৌকা, কলাগাছের ভেলা অথবা সাঁতরিয়ে স্কুলে যাতায়াত করছে। রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে ভেজা কাপড়ে স্কুল করায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক হারে ঠান্ডাজনিত রোগ জ্বর, সর্দি-কাশি দেখা দিয়েছে। পোতাজিয়া-রেশমবাড়ী, চকহরিপুর-চিনাধুকুরিয়া, তালগাছি-স্বরূপপুর পাকা সড়ক বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় এ এলাকার ২০ টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

অপরদিকে চিনাধুকুড়িয়া বাজার, বৃ-আঙ্গারু বাজার, চকহরিপুর বাজার, মূলকান্দি বাজার, আহম্মদপুর বাজার, বর্ণিয়া বাজার, ভেকা বজার, সোনাতনী বাজার, আগবাঙ্গালা বাজার, কাশিপুর বাজার, মারজান বাজার বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় এলাকাবাসী বাজারঘাট করতে পারছে না। ফলে এলাকাবাসী নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে না পারায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে। উপজেলার বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোতে ত্রাণ সামগ্রী না পৌছায় বন্যার্ত মানুষের মধ্যে ত্রাণের জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আহমেদ জানান, উপজেলায় বরাদ্ধকৃত ১৫ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ৫০ হাজার টাকা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। পুনরায় জেলা প্রশাসক বরাবর ত্রাণ সামগ্রীর জন্য আবেদন করা হয়েছে। ত্রাণ সামগ্রী আসা মাত্র তা দ্রুত বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

(এআরপি/এএস/সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৫)