নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় সাম্প্রতিক বন্যায় সাতটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এই বন্যায় উপজেলার ১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করায় বর্তমানে সেই বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

তবে আসন্ন পিএসসি পরীক্ষার জন্য বিকল্প জায়গায় পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে উপজেলার করজগ্রাম হিন্দুপাড়ার লাইকুড়ি, সিংড়াডাঙ্গা ও পোঁয়াতাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা খুবই করুন। এর মধ্যে লাইকুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারটি ভঙ্গুর মাটির কক্ষে বন্যার পানি প্রবেশ করায় তা বর্তমানে পাঠদানের অনুপযোগি হয়ে পড়ায় বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে গাছতলায়। প্রায় দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে রোদ আর বৃষ্টির মধ্যে গাছতলার নিচে পাঠদান করাতে বাধ্য হচ্ছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অন্যান্য বিদ্যালয়ের বিকল্প কক্ষের ব্যবস্থা থাকায় সেগুলো বেশি আশংকাজনক নয়।

লাইকুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রী নীহার রঞ্জন দেবনাথ জানান, গ্রামের ঝড়ে পড়া ছেলে-মেয়েদের মাঝে প্রাথমিক শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে ২০১০ সাল থেকে মাটির তৈরি চারটি কক্ষ নিয়ে শুরু হয় এই বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে মাটির কক্ষগুলোর কোন সংস্কার না করায় তা ছিল পাঠদানের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চালাতে হতো পাঠদান কার্যক্রম। কিন্তু সম্প্রতি বন্যায় কক্ষের মধ্যে হাঁটু পানি প্রবেশ করায় এই কক্ষগুলো আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পানি চলে যাওয়ার পর এই কক্ষগুলো ধ্বসে ভেঙ্গে পড়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

তিনি আরও জানান, এই বিদ্যালয়ে মোট ১৩০জন শিক্ষার্থী যাদের মধ্যে নিয়মিত পাঠগ্রহণ করে প্রায় ১১০-১২০ জন। শিক্ষার্থীদের তুলনায় পাঠের কক্ষ অপ্রতুল হওয়ায় গাদাগাদি করে পাঠগ্রহণ করতে বাধ্য হয় শিক্ষার্থীরা। প্রতি বছর বিদ্যালয়ে পিএসসিতে পাশের হার শতভাগ। সামনে পিএসসি পরীক্ষা তাই উপায় না পেয়ে শিক্ষার্থীদের বাগানের এই গাছতলায় পাঠদান করাতে বাধ্য হতে হচ্ছে। প্রতিদিন তিন শিফট্ কে ভেঙ্গে দুই শিফটে ভাগ করে এই পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। বিদ্যালয়ে জরুরী কাগজপত্রসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মজনুর রহমান জানান, সবগুলো বিদ্যালয়ের মধ্যে লাইকুড়ি বিদ্যালয়ের অবস্থা খুবই আশংকাজনক। যেখানেই হোক পাঠদান কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর সরকারি ভাবে অনুদান পেলে এই সব ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে।

(বিএম/এলপিবি/সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৫)