মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুরের শিবচর কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া নৌপথের নাব্যতা সংকট নিরসনের জন্য মূল চ্যানেলমুখে খননকাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য শুক্রবার থেকে টানা পাঁচ দিন বন্ধ রাখা হয়েছে সকল ফেরি চলাচল।

বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি ও ঘাট সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগে পদ্মার চ্যানেলমুখে নাব্যতা সংকট দূর করতে খননকাজ অব্যাহত রেখেছে চায়না মেজর ব্রিজের শক্তিশালী খননযন্ত্র। গত সপ্তাহ থেকে এই খননকাজ শুরু হয়। এতদিন চ্যানেলের আশে পাশে খনন কাজ চললেও শুক্রবার থেকে মূল চ্যানেলমুখে শুরু হবে খননকাজ। ফলে চ্যানেলমুখ দিয়ে মূল নদীতে ফেরি প্রবেশ করতে পারবে না চায়না মেজর ব্রিজের এই শক্তিশালী খননযন্ত্রের কারণে। আর তাই ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সকল ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এই নৌরুট দিয়ে চলাচলকারী সকল প্রকার পরিবহণকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুট ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

কাওড়াকান্দি ঘাট সূত্রে জানা গেছে, কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া নৌপথের হাজরা চ্যানেলমুখে পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে নদীর তলদেশ। মূল নদীতে প্রবেশের একমাত্র এই চ্যানেলে ডুবোচর জেগে উঠায় হুমকির মুখে পরে ফেরি চলাচল। চারটি রোরো ফেরি নাব্যতা সংকট দেখা দেয়ার শুরুতেই বন্ধ রাখা হয়েছে। এই ফেরি চলাচলের জন্য যতটুকু পানির গভীরতা প্রয়োজন চ্যানেল মুখে তা নেই।

এদিকে চ্যানেলমুখ অতিক্রম করলেই তীব্র স্রোতের মুখে পরতে হচ্ছে ফেরিগুলোকে। অপেক্ষাকৃত ছোট ফেরিগুলো এই তীব্র স্রোত উপেক্ষা করে পদ্মা পার হতে না পারায় সর্বশেষ অন্য সকল ফেরি চলাচলও বন্ধ করে দেয়া হয়। প্রায় একমাস ধরে এই অচলাবস্থা চলতে থাকে। অত্যাধিক স্রোতে দেশীয় খননযন্ত্র একস্থানে থেকে খননকাজ করতে না পারায় নৌরুট সচল করা নিয়ে হিমশিম খেতে থাকে কর্তৃপক্ষ।

দীর্ঘদিন নৌরুট বন্ধ থাকায় ¯’বিরতা নেমে আসে কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া। দুর্ভোগ বাড়তে থাকে সাধারণ মানুষের।

কাওড়াকান্দি ফেরি ঘাট সূত্র আরো জানায়, ১৮টি ফেরির মধ্যে মাত্র দুটি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছিল ক’দিন ধরে। এদিকে দেশীয় খননযন্ত্র ব্যর্থ হয়ে গেলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য আনা চায়না মেজর ব্রিজের শক্তিশালী খননযন্ত্র দিয়ে গত দুই সেপ্টেম্বর থেকে খননকাজ শুরু করা হয় এই নৌরুটে।

নৌরুটের চ্যানেলমুখে পুরোপুরি নাব্যতা সংকট নিরসনে শুক্রবার থেকে টানা আরো পাঁচ দিন কাজ করে যাবে এই খনন যন্ত্রটি। চ্যানেলের মাঝে খনন কাজ শুরু করায় সকল ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হবে আগামী পাঁচ দিন।

বিআইডব্লিউটিসি’র মেরিন কর্মকর্তা মো. শাহজাহান মিঞা বলেন, ‘নাব্যতা সংকট দূর করতে পুরো চ্যানেলমুখ খনন করা লাগবে। আর এজন্যই আগামী পাঁচ দিন ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হবে। চ্যানেলে ড্রেজার অবস্থান করলে ফেরি চ্যানেলমুখ পার হয়ে মূল নদীতে প্রবেশ করতে পারবে না। আশা করা যায় আগামী পাঁচ দিন পর সকল ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে।’

(এএসএ/এপিবি/সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৫)