‘ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে’
স্টাফ রিপোর্টার : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, মামলা পরিচালনা করতে আইনজীবীরা যে ফি পান তার একটা অংশ তাদের সহকারীদের দেওয়া উচিত। এতে তাদের কাজে আগ্রহ বাড়বে।
শনিবার সুপ্রিমকোর্টে বাংলাদেশ আইনজীবী সহকারী সমিতির ৪র্থ মহাসম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, আইনজীবী সহকারীদের পেশার স্বীকৃতি প্রদানে শিগগিরই আইন পাস করা হবে। আলাপ-আলোচনা করে পার্লামেন্টে যেন দ্রুত আইন প্রণয়ন হয় সেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আইনজীবীর সহকারীদের স্বীকৃতি দেওয়া হলে আদালতে অনিয়ম দূর করা সহজ হবে।
আনিসুল হক আইনজীবী সহকারীদেরকে আশস্ত করে বলেন, আমার কাছে আপনাদের দাবি করতে হবে না। পেশাগত স্বীকৃতি চাওয়া আপনাদের ন্যায় সঙ্গত দাবি। আপনারা মর্যাদা পাবেন। কাউকে মর্যাদা দিতে শেখ হাসিনার সরকার কার্পণ্য করে না। পরে তিনি সারাদেশে আইনজীবীর সহকারীদের তহবিলের জন্য ৫লক্ষ্য টাকা অনুদান প্রদান করেন।
বিশেষ অতিথি অ্যটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আইনজীবী সহকারীরা সৎ থাকলে কাজ করা সহজ হয়ে যায়।
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, জাল সার্টিফিকেটের কাছে আইনজীবীরা এবং আইনজীবীর সহকারীরা বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে সহকারীদের সচেতন হতে হবে।
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু সুপ্রিমকোর্টের একটি মামলা ফাইল করতে হলে প্রতিটি টেবিলে ঘুষ দিতে হয়। একজন আইনজীবীর সহকারী একটি মামলা করতে গিয়ে যে পারিশ্রামিক পায় একটি মামলা ফাইল করার সময় তার চেয়ে বেশি টাকা ঘুষ দিতে হয়।
সুপ্রিমকোর্টসহ সারাদেশের জেলা আদালতগুলোতে একই অবস্থা। এদের বিচার করবে কে? অনেক বিচারক ঘুষ খায়। যেসব বিচারক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তাদেরকে আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জামিন না দেওয়ার জন্য বলা হলে তারা সে অনুযায়ী কাজ করে। আর যেসব বিচারক সৎ তাদেরকে ফোন দিলেও লাভ হয় না। আইনমন্ত্রীর উদ্দ্যেশে বলবো আপনাকে সারাদেশের মানুষ সৎ মানুষ হিসেবে জানে। তাই আপনি ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যবস্থা করবেন।
খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করছে না। বরং দেশের বড় বড় সকল মামলার বিচার কাজ করে সরকার ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করছে। ফোন দিয়ে জুডিশিয়ারির ওপর মন্ত্রণালয় থেকে কোন মামলার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা হয় না।
সাবেক সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ বলেন, আইনজীবী সহকারী সমিতির দাবিকে আমরা সমর্থন জানাচ্ছি। আমরা চাই আদালত অঙ্গনে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আপনারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন।
আইনজীবী সহকারী সমিতির সভাপতি নুর মিয়ার সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি হারুন অর-রশিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, আ্যডভোকেট জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট বশির আহমেদ ও অল- ইন্ডিয়া ক্লার্ক আইনজীবী কার্যকরি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অশোক কুমার মণ্ডল।
অনুষ্ঠানে আইনজীবীর সহকারী সংগঠনের পক্ষ থেকে স্বীকৃতিসহ মোট নয় দফা দাবি পাস করা হয়।
(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫)