শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুর চোর সন্দেহে ফকিরের দেয়া চিকিৎসায় ১০ দিন যাবৎ অচেতন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে এক দরিদ্র কৃষি শ্রমিক।

এলাকার প্রভাবশালীরা ওই ছেলেটির চিকিৎসা করাতে বাধা দেয়ায় দিন দিন সে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। এ ঘটনায় এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। অসুস্থ যুবকের স্ত্রী তার দুই অবুঝ শিশুকে নিয়ে চোখে দেখছে ঘোর অন্ধকার।

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, গত ২৮ দিন আগে নিজের ঘর থেকে ৪৭ হাজার টাকা খোয়া যায় শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের উত্তর মলনচরা গ্রামের পল্লী চিকিৎসক আনোয়ার হোসেনের। টাকা উদ্ধারের জন্য আনোয়র হোসেন কোন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা জনপ্রতিনিধিদের কাছে না গিয়ে তিনি আশ্রয় গ্রহণ করেন স্থানীয় গনক, কবিরাজ ও ফকিরের কাছে। তাতেও টাকা উদ্ধার না হওয়ায় গত ৫ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার এক ফকিরের কাছ থেকে রুটি ও ডিম পড়ে এনে তা খাওয়ায় একই গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদ ঢালীর ছেলে আলী হোসেনকে। রুটি পড়া খাওয়ার পরই আলী হোসেন অচেতন হয়ে যায়। তাকে পরিবারের সদস্য ও এলাকার লোকজন চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা করতে চাইলে আনোয়ারের পক্ষের স্থানীয় প্রভাবশালী মজিবর সরদার চিকিৎসা করাতে বাধা দেয়। ফলে আজ ১০ দিন যাবৎ অচেতন অবস্থায় পরে রয়েছে আলী হোসেন। তাকে বিছানায় শুইয়ে রেখে মাথার ঝর্নার পানি ঢেলে কোন রকমে বাঁচিয়ে রেখেছে পরিবারের সদস্যরা। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কিছুই জানেননা বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান।

আলী হেসেনের স্ত্রী রুনা আকতার বলেছেন, আমার স্বামীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ফকিরের কাছ থেকে ডিম ও রুটি পড়া খাইয়ে অসুস্থ করে রেখেছে। এলাকার ক্ষমতাশালীরা আমার স্বামীর চিকিৎসা করাতে বাধা দিচ্ছে। আমি আমার স্বামীর এ অবস্থার জন্য দোষীদের বিচার চাই।

আলী হোসেনের বাবা আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, আমার ছেছে সম্পূর্ন নির্দোষ। যারা আমার ছেলেকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে তাদের বিচার চাই।

নাগেরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. এনায়েত করিম মিলু বলেন, ফকিরের এ চিকিৎসাকে অবৈধ। যারা প্রচলিত আইন অমান্য করে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তাদের আইনের মুখোমুখি হতে হবে।

(কেএনআই/এলপিবি/সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৫)