বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের অবহেলায় সদর ইউনিয়ন বাউফলের গোসিংগা গ্রামের বাসিন্দা আফসের আলী সিকদার (৭০) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে চিকিৎসকের সামনে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাড়ান্দায় মারা যান তিনি।

নিহতের পুত্রবধূ কামরুননাহার জানান, বুকে-পিঠে ব্যথায় রবিবার রাত থেকে ছটফট করছিল তার শশুর আফসের আলী সিকদার। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে দু’ঘন্টারও বেশি সময় অপেক্ষা করেও চিকিৎসা পায়নি তিনি। ব্যাথায় কাতর তার শশুর আফসের আলী নিজে কর্তব্যরত ডাক্তার সাইফুল ইসলাম শামিমকে অনুরোধ করেও চিকিৎসা পাননি তিনি। দুপুর পৌনে ১২ টার দিকে লুটিয়ে পড়ে মারা যায় সে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের সামনে চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগ করে চিৎকার আর কান্না জড়ানো কন্ঠে নিহতের ছেলে মাসুদ সিকদার (৩৫) বলেন, ‘বাবায় ডাক্তাররে কইছে ব্যাথায় আমি দাঁড়াইয়া থাকতে পারি না, বইতেও পারি না। সইয্য করতে পারি না। একটু দ্যাহেন স্যার। হ্যার পরও ডাক্তার শামিম হ্যারে না দেইখ্যা অন্যজায়গায় রোগী দ্যাখতে যায়। বাবায় অনেক কাগুতি-মিনতি করছে ডাক্তার কাছে। হ্যারপর আবার ডাক্তারের সামনে (জরুরী বিভাগের সামনে) নিয়ে গেলে বাবায় পইরগ্যা (লুটিয়ে পড়ে) যায়। তহন হে (চিকিৎসক) দেইখ্যা কয় বাবায় আর নাই। ডাক্তাররে আমিও অনুরোধ করছিলাম। ডাক্তার ভ্রক্ষেপ না করণে হাসপাতালে ঘোরাঘুরি কইরাও বাবারে ডাক্তার দেহাইতে পারি নাই।’

ওই চিকিৎসকের সামনেই চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন রোগি উপস্থিত স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে বলেন, ‘একটু দেইখ্যা দেওনের অনুরোধ করছিল হে (আফসের আলী)। ব্যথার কস্টে দাঁড়াইয়া-বইয়া না থাকতে পারনের কথা ডাক্তাররে কইছিল।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম শামীম অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘অসুস্থতা নিয়েই সবাই হাসপাতালে আসে। ভর্তি করানোর আগেই তিনি মারা গেছেন।

হাসপাতালের টিকিট না নিয়ে ইমার্জেন্সী বিভাগে নিয়ে গেলে হয়ত ওনাকে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া যেত। কর্তব্যে অবহেলার বিষয়টি সঠিক নয়। তার পরিবারের পক্ষ থেকে জেনেছি রোববার রাতে তিনি (আফসের আলী) স্ট্রোক করেছেন। শেষ অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিয়ে আসা হয় তাকে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি বাহিরে ছিলাম। ডাক্তার অবহেলা করে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

(এমএবি/এএস/সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৫)