শরীয়তপুর প্রতিনিধি :শরীয়তপুর-চাঁদপুর ফেরী চলাচলের জন্য শরীয়তপুর ঘাটে গত ৭ দিন যাবৎ শত শত পন্যবাহী  ট্রাক আটকে রয়েছে। কোরবানীর ঈদের গরু বহনকারী ট্রাককে প্রাধান্য দিতে গিয়ে যানজটে পরেছে অন্য সব গাড়ী। এদিকে কর্তৃপক্ষ বলছেন চারটি ফেরীর একটি বিকল ও একটি সড়িয়ে নেয়ায় এবং ভোলা জেলার দুইটি ফেরী ঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ অঞ্চল দিয়ে গাড়ী পাড়াপাড়ের কারনে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিন পরিদর্শণ করে ও শরীয়তপুর ফেরীঘাট টার্মিনাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মংলা বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্ধর, সিলেট থেকে বরিশাল বিভাগ সহ খুলনা বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের পূর্বাঞ্চলের সাথে সহজ এবং কম সময়ে যোগাযোগের জন্য ২০০১ সালে চালু হয়েছিল শরীয়তপুর- চাঁদপুর ফেরী সার্ভিস। গত ১৫ বছরে এই সার্ভিসটি কখনো স্বাভাবিক আবার কখনো অনিয়মতান্ত্রিকভাবে চলে আসছিল। বাংলাদেশ আভ্যন্তরিণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশন এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে এই রুটে কলমিলতা, কেতকী, কোস্তরী ও কামিনী নামের চারটি ফেরী নিয়মিতভাবে চলে আসছিল। গত ১৬ সেপ্টেম্বর কেতকী ফেরীটি সড়িয়ে নিয়ে মাওয়া ঘাটে স্থানান্তরিত করা হয়েছে এবং ১৮ সেপ্টেম্বর কামিনী ফেরীটি বিকল হয়ে যাওয়ায় তা মেরামতের জন্য নারায়নগঞ্জ ডকে পাঠানো হয়েছে।

এছারাও ভোলা জেলার ভেদুরিয়া-লাহারহাট ও ইলিশা-লক্ষ্মিপুর ফেরী সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চল থেকে নোয়াখালি ও চট্টগ্রাম গামী ফেরীগুলো শরীয়তপুরের উপর দিয়ে যাতায়াত করছে। ফলে শরীয়তপুর ঘাটে প্রতিদিন শত শত গাড়ী এসে জমা হওয়ায় দীর্ঘ জট তৈরী হয়েছে। অন্য দিকে কোবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশের এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে গবাদি পশু বহনকারী গাড়িও অস্বাভাবিক মাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় সেগুলো পাড়াপাড়ের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাচ্ছে। তাই অন্যান্য পন্যবাহী গাড়ীগুলোকে অধিক সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে । কিছু দিন থেকে মেঘনার পশ্চিম পাড়ে শরীয়তপুর অংশে সৃষ্টি হয়েছে মারাত্মক যানজট।

ভোমরা স্থল বন্দর থেকে চাউল নিয়ে ছেরে আসা চট্টগ্রাম গামী ট্রাক ড্রাইভার আবুল কাশেম, মংলা থেকে আসা সিলেট গামী ট্রাক চালক সবুজ জোয়ার্দার, ভোলা থেকে আসা লক্ষ্মিপুর গামী চালক বিপ্লব হোসেন ও পাথরঘাটা থেকে আসা কুমিল্লা গামী চালক তৈয়বুর রহমান বলেন, আমরা ৩-৪ দিন যাবৎ পন্য বোঝাই গাড়ী নিয়ে ফেরী ঘাটে বসে আছি, কোন সিরিয়াল পাচ্ছিনা। শুধু গণপরিবহন, কাচাঁ মাল ও গরুবাহী ট্রাক গুলো কর্তৃপক্ষ পাড়াপাড় করছে। আমাদের সুযোগ দিচ্ছেনা। আমরা যে ভাড়ায় চুক্তি করে পন্য বোঝাই করে গাড়ি ছেরেছি আমাদের সেই টাকা ঘাটে ঘাটে বসে বসেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। এদিকে উল্টো মহাজনদের গালমন্দ শুনতে হচ্ছে।

শরীয়তপুর-চাঁদপুর ফেরী সার্ভিসের শরীয়তপুর অংশের টার্মিনাল ম্যানেজার মো. হুমায়ুন কবীর ও তত্বাবধায়ক মো. আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, আমাদের চারটি ফেরীর মধ্যে মধ্যে এখন মাত্র ২টি ফেরী চালু রয়েছে। সামনে ঈদের কারনে গাড়ির সংখ্যা বেড়ে গেছে, তাই ঘাটে অসংখ্য গাড়ি পাড়াপাড়ের জন্য অপেক্ষায় আছে। আমরা নিয়ম অনুযায়ী পাবলিক পরিবহন, কাচাঁমাল ও কোরবানীর জন্য গবাদী পশুবাহী গাড়িগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাড় করে শেষ করতে পারছিনা। কর্তৃপক্ষের কাছে আরো ফেরী বারানোর জন্য প্রতিনিয়ত আবেদন করে যাচ্ছি। ঈদের আগে ফেরী বৃদ্ধি করা না হলে সমস্যা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


(কেএনআই/এসসি/সেপ্টেম্বর২০,২০১৫)