পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার পশুর হাটগুলি এখনও জমে না উঠলেও যে ভাবে খাজনা আদায় করা হচ্ছে তা চাঁদাবাজীকেও হার মানায়, এ ভাবে চলতে থাকলে আগামীতে মানুষ হাটে গরু ছাগল মহিষ বিক্রি করতে আসবে না আবার কিনতেও আসবে না’ উপরের কথাগুলো পাবনার শহরের পৈলানপুরের গরু ক্রেতা কামাল উদ্দিনের।

সদরের পুস্পপাড়া হাট থেকে ৩৩ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কনে তাকে খাজনা দিতে হয়েছে দেড় হাজার টাকা। আবার গরু বিক্রেতার কাছ থেকেও আদায় করা হয়েছে ৫‘শ টাকা। এ ভাবে পাবনার ২১ টি পশুর হাটে প্রতিটি গরু মহিষ ও ছাগল ক্রেতা ও বিক্রেতার কাছ থেকে জোর করে ‘খাজনা’ আদায় করা হচ্ছে। আবার গরু বিক্রি না হলেও দিতে হচ্ছে ২‘শ টাকা। এ ভাবে পাবনার বেড়ার চতুরহাট, নাকালিয়ারহাট, সদরের দাপুনিয়া, পুস্পপাড়া, টেবুনিয়া, আওতাপাড়া, চাটমোহরের রেলবাজার, ভাঙ্গুড়ার শরতগঞ্জ, ঈশ্বরদীর মুলাডুলি, অরনকোলা, সাঁথিয়া, বনগ্রাম, কাশীনাথপুরসহ জেলার ছোট বড় ২১ টি হাটে জোর করে খাজনা আদায় করা হচ্ছে। যেন দেখার কেউ নেই।

সদর উপজেলার পুস্পপাড়া হাটে চলে খাস কালেকশন তাই অনিয়মও বেশী। দীর্ঘ ১২ বছর ঐ হাটের কোন ইজারা হয়না। গত বছরের ৩১ মে ঐ হাটের খাজনার টাকার ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে ৪ আওয়ামীলীগ কর্মীকে গুলি করে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এর পরও হাটের টোল আদায় নিয়ে দ্বন্দ্ব কোন্দল রয়েই গেছে। যে কোন সময় বড় অঘটন ঘটতে পারে।

পাবনার বেড়ার করমজা হাটে দেড় থেকে চারগুন খাঁজনা আদায় করা হচ্ছে। চাটমোহর নতুনবাজার হাটে কোরবানির জন্য গরু ক্রয় করেন ছোটশালিখা মহল্লার মহন খান। ১৬ হাজার টাকার গরুটির জন্য ইজারাদারকে খাজনা দিতে হয়েছে ৫শ টাকা। গরুর বিক্রেতা বললেন, গরুটি বেচ্যার জন্য আমাকে খাজনা দিতে হইছে ২শ ট্যাকা। ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, হাটের ইজারাদার ও তাঁর লোকজন ইচ্ছেমত খাজনা আদায় করছেন। প্রতিবাদ করলে ইজারাদার গংদের হাতে হাটুরেদেরকে লাঞ্ছিত হতে হয়। হাটে খাজনার তথ্য সম্বলিত সাইনবোর্ড টাঙ্গানোর বিধান থাকলেও বেশির ভাগ হাটের ইজারাদার তা মানেন নি।

এব্যাপারে বেশ কয়েকজন হাট ইজারাদারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা কথা বলতে রাজি হয়নি।
পাবনার পুলিশ সুপার মো: আলমগীর কবীর জানান, গরু ব্যবসায়ীরা এবং বেপারীরা যাতে নির্বিয়েœ ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারে সে ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি। খাজনা আদায়ের সঙ্গে পুলিশের কোন সম্পর্ক নেই।

পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব ড. ফারুক আহমেদ জানান, এ পর্যন্ত কেউ তাদের কাছে খাজনার বিষয়ে কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




(পিএস/এসসি/সেপ্টেম্বর২২,২০১৫)