মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচর পাকা মসজিদ এলাকায় রবিবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আগুনে দগ্ধ এক গৃহবধু মারা গেছে।

তবে পরিবার থেকে অভিযোগ না থাকলেও স্থানীয়ভাবে অভিযোগ রয়েছে তার স্বামী মেম্বার লুৎফর মাতুব্বরের নির্যাতনের জন্যই এই গৃহবধু মারা গেছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার পাচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার লুৎফর মাতুব্বরের স্ত্রী সাফিয়া বেগম (৪৫) ঈদের দুইদিন আগে ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে রান্না করতে গেলে মাথা ঘুরে চুলায় রান্না করা ডালের কড়াই এর মধ্যে পড়ে যায়। এ সময় তার উপরের অংশ পুড়ে যায়। পরিবারের লোকজন তাকে প্রথমে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পরে স্থানীয় প্রাইভেট হাসপাতাল চরমুগরিয়া আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার ভোরে মারা যায়।

অপরদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিহতের এক আত্মীয়, স্থানীয় ব্যবসায়িসহ ১০/১২ জন প্রতিবেশী জানান, ঘটনার দিন রান্না করার সময় পারিবারিক কলহের জের ধরে টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে মেম্বার লুৎফর তার স্ত্রী সাফিয়ার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায় লুৎফর তার স্ত্রীকে লাথি মারে। এ সময় ঐ গৃহবধু জ্বলন্ত চুলায় রান্না করা ডালের কড়াই এর মধ্যে পড়ে যায়। এতে করে ঐ গৃহবধু প্রথমে কড়াই এর গরম ডাল ও পরে জ্বলন্ত চুলার আগুনে শরীরের উপরের অংশ ঝলসে যায়।

এ সময় তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, তারা ভয় পেয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে প্রথমে মাদারীপুর সদর হাসপাতাল ভর্তি করলেও পরে সেখান থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ও শহর থেকে একটু দুরে চরমুগরিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঐ গৃহবধু মারা যায়।

তবে এ সম্পর্কে কোন অভিযোগ নেই নিহতের পরিবারের। সব অভিযোগ অস্বীকার করে গৃহবধুর স্বামী মেম্বার লুৎফর মাতুব্বর ও তার ছেলে সোহেল মাতুব্বর বলেন, রান্না করতে গিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটছে।

এ ব্যাপারে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার কণা বলেন, ঘটনার কথা শুনিনি। তবে মাদারীপুর সদর থানার ওসির সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জিয়াউল মোর্শেদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে বা পরিবার থেকে কেউ অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এএসএ/এনএস/২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫)