রব্বানী চৌধুরী ভাবজাত ছড়া শিল্পী। শুরু থেকে ছড়ায় প্রতিভার অবদান রেখেছেনG তার ছড়ায় -
জীবনের নানা উপভোগের স্তর পরম্পরা আছে। আছে দেখার শৈলীময় শুভদৃষ্টি। স্বরবৃত্তের ঘোড়সওয়ার হয়ে এই যে, তাকিয়ে দেখার সোচ্চারতা ছড়াকার রব্বানী চৌধুরীকে বিশিষ্টতা দান করেছে, সেটা উপভোগের বিষয়।।
রব্বানীর ছড়ার যা মৌল স্বভাব, সময়কে ধারণ করা, সমাজমনস্কতাকে বিস্তার করা, মানবিকতাকে বিভাসিত করা- সবই করা হয়েছে এখানে। তাঁর ছড়া সমাজ-বীক্ষা ও রাজনীতিবোধকেও অস্বীকার করে না। এসব ব্যক্তিমুদ্রার প্রকারের বাইরে এসে এ বই একটা আলাদা আঁখর ধরেছে। সেটা হলো-স্মৃতিভারাতুর শৈশবকে পুনরুদ্ধার ও মানবিক মূল্যবোধের প্রকাশ। তাঁর দৃষ্টির লাবণ্যে এক ধরনের স্বচ্ছতা আছে যা অসাম্প্রদায়িকতার কাছে নিবেদিত। তিনি এক আন্তঃদেশীয় মানসতার সংকীর্ণ মতবাদিক ঘেরাটোপে বন্দি নন। তিনি যা সত্য বলে জেনেছেন সেই কথাটাই মুক্তকণ্ঠে বলেছেন। তাঁর বলার মধ্যে কোন নেতিবাচকতা নেই। তাঁর চিন্তনে আছে মানুষেরই জয়গান। দু’একটি উদাহরণ দিলেই বিষয়টিই মনোগ্রাহ্য হবে। পরপর সাজিয়ে দিলাম এ জন্যেই কয়েকটি কবিতা। মুগ্ধ পাঠক এখানেই ¯পর্শ করতে পারবেন তাঁর মানবসিত মননকে।

উৎস প্রকাশন প্রকাশ করেছে তাঁর সাম্প্রতিকতম ছড়ার বই ‘সূর্য যেন রিং’। উত্তম সেনের মনোরম অলংকরণে পরিবেশিত হয়েছে শিশু পাঠক ও শিশুমনস্ক পাঠকের কাছে। বইটিতে ছড়া রচিত হয়েছে ২৩.৯.০৭ থেকে ২.১০.২০০৭ সীমা সময়ের ব্যাপ্তিতে। রব্বানী চৌধুরী স্বভাবজাত ছড়াকার বলে দ্রুততম সময়ে একটি শৈল্পিকছড়াগ্রন্থ রচনা করেছেন। মুদ্রণ শোভনতাও উৎসের কৌলিন্যেরই প্রকাশ।


১.
ভালো বংশে জন্মিলেই/ ভালো হয় না লোক
ভালো মানুষ জেনেশুনে/ কাউকে দেয় না দুখ।
ভালো মানুষ গায়ে লেখা/ থাকে না তো জানি
ভালো মানুষ প্রমাণ করে /কৃত কর্মখানি।
২.
সাম্প্রদায়িক পশু যারা বিধর্মীদের মারে
অত্যাচারী অসুর আর শয়তান ওদের ঘাড়ে
ওদের ধর্ম ধ্বংস করা
বিবেকবুদ্ধি ওদের মরা
ওরা মানবতার হত্যাকারী- কে না বলতে পারে?
৩.
শাহ্জালালের পুণ্যভূমি সিলেট আমার দেশ
হাদা-মাদার গুণের কথা লিখলে হয় না শেষ
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু
ঢাকা-দক্ষিণ গেলে কভু
এই সিলেটের কীর্তিগাথার পাবে অনেক রেশ।
.