গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরের বরমী গ্রামের চাঞ্চল্যকর ফারজানা আক্তার নার্গিস (২০) হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে।

বিচারক রায়ে ৯ মাসের অন্ত:সত্তা ফারজানাকে হত্যার দায়ে বড় ভাই জহিরুল ইসলামকে কালুকে (৩২) ফাঁসি এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন।

গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম এনামুল হক আসামির উপস্থিতিতে মঙ্গলবার সকালে রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত কালু শ্রীপুরের বরমী বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূরুল ইসলামের ছেলে।

জানা গেছে, ২০১২ সালের ৫ মার্চ সকার ১১টার দিকে ছোট বোন ফারজানাকে ঘরের দরজা আটকে গরু জবাইয়ের ছুরি দিয়ে জবাই করে কালু। খুন হওয়ার ১৪ মাস আগে ফারজানা প্রেম করে একই গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা আসাদুজ্জামান আজাদকে বিয়ে করে। দুই পরিবারের কেউ বিয়ে মেনে না নেওয়ায় আজাদ স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতো। এরই মধ্যে ফারজানা ৯ মাসের সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়ে। ১২ মার্চ চিকিৎসক ফারজানার ডেলিভারীর তারিখ দেয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্যদের মধ্যস্থতায় দু’পরিবারের মধ্যে সমঝতা হলে ঘটনার আগের দিন বাবা নুরুল ইসলাম মেয়ে ফারজানাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। তিনি ফারজানার নামে কিছু জমি এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে শ্বশুরবাড়ি তুলে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেন।

বিয়ের পর আজাদ একাধিক বার ফারজানাকে বরমী বাজারে প্রকাশ্যে বেদম প্রহার করে। আজাদ হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি এবং অত্যন্ত খারাপ ছেলে হওয়ায় বোনকে তুলে দিতে এবং জমি লিখে দেওয়ার সিদ্ধান্তের আপত্তি জানায় কালু। তাকে জমি দিলে আজাদ ওই জমি বিক্রি করে দিতে ফারজনাকে বাধ্য করবে।

এসব কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে কালু খালি বাড়িতে অন্তঃসত্ত্বা ছোট বোনকে পৈশাচিক কায়দায় জবাই করে হত্যা করে। পরে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনতা কালুকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। সে থানায় পুলিশের কাছে বোনকে খুনের কথা স্বীকার করে।

এ ঘটনায় নিহতের স্বামী আজাদ বাদি হয়ে জহিরুল ইসলাম কালুকে আসামি করে শ্রীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ওই বছরের ১ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালুকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানী শেষে মঙ্গলবার গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম এনামুল হক আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন।

রাস্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন গাজীপুরের পিপি অ্যাডভোকেট হারিছ উদ্দিন আহমদ। আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোঃ সাহাবুদ্দিন মোড়ল।

(এসএএস/এলপিবি/সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৫)