স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা : সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য বেশি এ কথাটি অনেকেই মনে রাখেন না। কুমিল্লা গোমতী নদীর উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বানাসুয়া রেলওয়ে সেতুর দুই পাড়ের হাজার হাজার মানুষ সময় এবং ভাড়া বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২৫ মিনিটের মাথায় তিনটি ট্রেন ব্রিজের উপর দিয়ে যায়। কিন্তু ট্রেন আসলে ঘটতে পারে যে কোন বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এমনকি ওইখানে ঘুরতে গিয়ে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। নিজের জীবন ঝুঁকি তার উপর অতিরিক্ত দায়িত্ব সন্তানকে কোলে নিয়ে ব্রিজ পার হচ্ছেন অনেক বাবা ও মা। কেউ কেউ আবার মাথায় অনেক বড় বড় বোঝা নিয়ে কিংবা সাইকেল নিয়ে পার হতে দেখা যায়। অনেকে আবার মোবাইল ফোনে ব্রিজের উপর বসে কথা বলতে ব্যস্ত। ঘুরতে আসা অনেক পথচারী সেলফি তুলতেও ব্যস্ত থাকেন। ঝুঁকি নিয়ে সাধারণ মানুষ পার হচ্ছে। পালপাড়া ব্রিজ থাকার পরও ওই পাড়ের মানুষরা জীবনের ঝুঁকি কেন ? জীবনের চেয়েও কি সময় ও অর্থ বেশি ? এমন প্রশ্ন রয়েছে অনেকের। বানাসুয়া এলাকার শীল মজনু মিয়া তার ভাতিজী ও পরিবারের লোকজনকে রেলওয়ে সেতুর উপর দিয়ে পাড় করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, এই ব্রিজ দিয়ে গেলে সময় বাচে অনেক। আর ভাড়াও বেচে যায়। পালপাড়া ব্রিজ দিয়ে ঘুরে আসতে অনেক সময় লাগে। আর এখান দিয়ে গেলে দেরি হয় না। টাকাও বেচে যায়। তাই সব দিক বিবেচনায় একটু ঝুকি হলেও রেল সেতু দিয়েই ওপারে চলে যাই।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেন এ ব্রিজে উঠেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ট্রেনের আসার সাথে সাথে দৌড়ে পাশে দাঁড়িয়ে যাই। এ ব্রিজে কি কোন দুর্ঘটনা ঘটে না। প্রায় এখানে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। কিছুদিন আগেও একটি শিশু দৌড়ে পড়ে যায়। এ জায়গায় ঘটেছে অনেক দুর্ঘটনা। এছাড়াও ব্রিজের এ এলাকায় ছিনতাইকারী ও নেশাখুরদের আখড়া হয়ে উঠছে। নিরাপদ আড্ডাস্থল হয়ে ওঠেছে। সুযোগ পেলেই ছিনতাইকারীরা কেড়ে নেয় পথচারীদের সহায়সম্বল। ওই এলাকার কয়েকজন দাবি করেন কেউ কারো কথা শুনে না। এখানে প্রশাসনের নজরদারি থাকা উচিত। রেলের উপর দিয়ে না হাটার জন্য বলা হলেও কেউ সতর্ক হচ্ছেন না। সবাই যদি সচেতন থাকেন তাহলে কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটবে না। ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম থেকে ৫৮টি ট্রেন (মাল গাড়িসহ) যাতায়াত করে।

(এইচকেজে/এএস/অক্টোবর ০৫, ২০১৫)