নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁয় যৌতুকের দাবিতে স্বামী কর্তৃক শরীরে কেরোসিন ঢেলে অগ্নিদগ্ধ গৃহবধু শম্পা এখন পিতার বাড়িতে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করানোর ক্ষমতা নাই বলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঢাকায় নেয়া সম্ভব হয়নি তাদের। তাই মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও দুর্বিষহ যন্ত্রনা বুকে চেপে রেখে বাড়িতেই বিনা চিকিৎসায় রেখে দিয়েছেন তাদের একমাত্র কন্যাকে।

জানা গেছে, নওগাঁ সদর উপজেলার চকরামপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেন-এর কন্যা উক্ত শম্পা’র বিয়ে হয় ৩ বছর পূর্বে একই উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের বিপ্লবের সাথে। বিয়ের সময় ২০ হাজার টাকা নগদ প্রদান করা হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুক বাবদ অতিরিক্ত দাবীকৃত ৫০ হাজার টাকার জন্য স্বামী তার স্ত্রীকে মারপিট ও শারিরীক নির্যাতন অব্যাহত রাখে। ওই এলাকার ইউপি সদস্য ওয়াজেদ আলী জানিয়েছেন এ নিয়ে গ্রামে কয়েকদফা শালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু কোন ফল হয়নি। নির্যাতন অব্যাহত থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় বিপ্লব তাকে গত ১২মে সারাদিন ধরে মারপিট করে। রাত অনুমান সাড়ে ১০টায় তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের সামনের অংশসহ দুই হাত, পা সম্পূর্ন পুড়ে গেছে। তার চিৎকারে প্রতিবেশী হাকিম ও তার স্ত্রী শাহিনা হাকিম মারাত্মক দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে রাত প্রায় সাড়ে ১১টায় নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন। সেখান থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাজশাহীতে ৭দিন চিকিৎসার পর চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ণ ইউনিটে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। কিন্তু রিক্সাচালক পিতার পক্ষে চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহ করা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। যেখানে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার সংগ্রহ করাই যার পক্ষে প্রায় অসম্ভব।
অপরদিকে বাদীকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য আসামী পক্ষরা বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন বলে মামলার বাদী ইসমাইল হোসেন অভিযোগ করেছেন। আসামী পক্ষের আতœীয়ের নিজ মোবাইল থেকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দেয়ার ব্যাপারে নওগাঁ সদর মডেল থানায় আরো একটি জিডি করা হয়েছে। এব্যপারে নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ জাকিরুল ইসলাম জানান, মামলার মূল আসামী বিপ্লবসহ ৩জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য ৪জনকে গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বাদীকে হুমকি দেয়ার ব্যাপারে থানায় জিডি হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।
বিশ্বজিৎ মনি।