মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া কৃষি ব্যাংক শাখায় প্রায়  দেড় কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। শস্য গুদাম ঋণ প্রকল্পের গুদাম রক্ষক শফি শেখ স্থানীয় চুরানব্বই জন কৃষকের নামে ভূয়া ঋণ দেখিয়ে এই টাকা উত্তোলন করেন। যার প্রতিবাদে ভূক্তভোগি কৃষকরা সোমবার দুপুরে ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে ৭ দিনের মধ্যে ঋণ মুক্তির দাবি জানিয়েছে।

ভূক্তভোগি কৃষকরা অভিযোগ করেন, মাগুরার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া শস্য গুদাম ঋণ প্রকল্পের গুদাম রক্ষক শফি শেখ শালিখা উপজেলার আড়পাড়া, দরিশলই, কৃষ্ণপুর, কুমোরকোঠা, কেচুয়াডুবি সহ অন্তত ১০টি গ্রামের ৯৪ জন প্রান্তিক কৃষকের নামে জালিয়াতির মাধ্যমে আড়পাড়া কৃষি ব্যাংক থেকে সর্বমোট ৮৮ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকার ঋণ উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন।

যা বর্তমানে সুদসহ দাড়িয়েছে ১ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা। এদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণের টাকা আদায় না হওয়ায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই সমস্ত কৃষকের নামে সম্প্রতি উকিল নোটিশ জারি করলে জালিয়াতির বিষয়টি কৃষকদের কাছে ধরা পড়ে। এ অবস্থায় কৃষকরা সোমবার দুপুরে জড়োবদ্ধ হয়ে ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ করে। পরে তারা আড়পাড়া বাজারে অবস্থিত শফি শেখের রাইচ মিলে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।

স্থানীয় কৃষক সিদ্দিক আলি, আবু তালেব মোল্যা, লুতফর রহমান, বাবর আলি, বকুল বিশ্বাসসহ আরো অনেক কৃষক জানান, শফি শেখ চুরানব্বই জন কৃষকের নামে স্থানীয় কৃষি ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তার সহযোগিতায় ৮৮ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। যে বিষয়টি সম্পর্কে তাদের কোন ধারণাই নেই। এমনকি ৩ বছর আগে তাদের নামে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া হলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কখনোই তাদেরকে কোন প্রকার নোটিশ দেয়নি। অথচ হঠাত করে তারা ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য সম্প্রতি বাড়িতে বাড়িতে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে।

এদিকে কৃষকদের নামে জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ গ্রহণ করায় বিক্ষুব্ধ কৃষকরা ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ করলে শালিখা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আরজ আলি বিশ্বাস ভূক্তভোগি কৃষকদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে অবিলম্বে তাদের ঋণের দায় থেকে মুক্তির দাবি জানান।

এ বিষয়ে ব্যাংক ম্যানেজার মিজানুর রহমান জানান, বেশ আগেই জালিয়াতির বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। বিষয়টি জানার পর এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ইতোমধ্যেই এই শাখার পূর্বতন ম্যানেজার রাজকুমার চৌধুরী, আবদুল গফুর ও পরিদর্শক ফতেহ আলিকে চাকরি চ্যুত করা হয়েছে। তাছাড়া গুদাম রক্ষক শফি শেখের বিরুদ্ধেও গত বছরের ২৭ আগস্ট তারিখে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেটি এখনো চলছে।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত শফি শেখের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

(ডিসি/এএস/অক্টোবর ০৫, ২০১৫)