মাগুরা প্রতিনিধি : ‘আগে স্কুলে আসলে শুধু চিন্তা থাকতো কখন বাড়ি যাবো। দুপুরের পর থেকেই ক্ষুধায় প্রাণ যায় যায় করতো। কিন্তু ক্লাস ছুটি না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি যাওয়া যাবেনা। তাই ক্ষুধা নিয়েই বিকাল ৪টা পর্যন্ত ক্লাস করতে হতো। দু একদিন সামান্য নাস্তা খেতে পেলেও অধিকাংশ দিনই কিছুই জুটতো না।

ফলে বিকেলের ক্লাসে লেখাপড়াও ভাল হতো না। এখন দুপুরে কিছু খেতে পারলে শরীরও সুস্থ্য থাকবে। পড়াশুনায়ও মন বসবে।’ বলছিল মাগুরা সদর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম ধর্মদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র মোঃ নয়ন, প্রদীপ সাহা, সাথি বিশ্বাস, মলয় সাহা, মুন্নি বেগমসহ ছাত্রছাত্রীরা। আজ থেকে এ স্কুলের নিজস্ব অর্থায়নে চালু হয়েছে দুপুরে খাবার প্রদান কর্মসূচী। মাগুরা জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এটাই প্রথম ‘মিড ডে মিল’ কর্মসূচী গ্রহণ। বিদ্যালয়ের প্রায় ৩শ ছাত্রছাত্রীকে প্রতিদিন দুপুরে এ কর্মসূচীর আওতায় খাবার সরবরাহ করবে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

এ উপলক্ষে আজ সোমবার দুপুরে স্কুল চত্বরে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাগুরার জেলা প্রশাসক মোঃ মাহ্বুবর রহমান।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি দীপ্ত সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাগুরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রুস্তম আলী, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইয়ারুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ শামসুদ্দৌজা, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ কুন্ডু, শত্রুজিৎপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

সভায় বক্তারা ধর্মদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ধারাবাহিকতায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল চালু করার আহবান জানান।

স্কুল পরিচালনা কর্তৃপক্ষ জানান- এ বিদ্যালয়টি বাংলাদেশের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয় যার মালিকানায় ১৪.১৪ একর জমি রয়েছে। এ জমির আয় থেকেই নিয়মিত এ মিড ডে মিল অনুষ্ঠান করার ঘোষণা দেন কর্তৃপক্ষ। তবে তারা বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয়ের বেহাত হয়ে যাওয়া প্রায় ৫ একর জমি পুনরুদ্ধারের জন্যও কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ সময় বক্তারা এ বিদ্যালয়ের জমি দাতা দানবীর প্রয়াত প্রিয়নাথ সাহা ও অধর চন্দ্র সাহার স্মৃতি সংরক্ষনের আহবান জানান।

(ডিসি/এএস/অক্টোবর ০৬, ২০১৫)