মাগুরা প্রতিনিধি : স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকেদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে নিজের ও সন্তানের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন মাগুরার শালিখা উপজেলার থৈপাড়া নূরপূর গ্রামের এক গৃহবধূ। আগুনে পুড়ে এক বছরের শিশু কন্যা শ্রুতি  মারা গেলেও  সারা শরীরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকালে  মৃত্যু বরন করে অষ্টাদশী গৃহবধূ অনিমা বিশ্বাস।

প্রতিবেশি ঠেকারী বিশ্বাস জানান, নূরপুর গ্রামের স্বপন বিশ্বাসের ছেলে কৃষক সুমন বিশ্বাসের সাথে দুই বছর আগে বিয়ে হয় পাশ্ববর্তী গ্রাম ঝিনাইদহ জেলার বামনআইল গ্রামের গৌতম বিশ্বাসের মেয়ে অনিমার। এক বছর আগে তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে ছোটখাট বিষয় নিয়ে স্বামী সুমন ও শাশুড়ী মনিমালা বিশ্বাসসহ বাড়ির লোকজন গৃহবধূ অনিমার উপর শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন শুরু করে। সম্প্রতি তা চরম আকার ধারণ করে।

ধারাবাহিক অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে গৃহবধূ অনিমা তার শিশু কন্যা শ্রুতিকে নিয়ে ধানের ডোলের মধ্যে গিয়ে শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আত্মহত্যার জন্য আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে শিশুটির সারা দেহ দগ্ধ হয় ও মা অনিমার শ্বাসনালীসহ অধিকাংশ শরীর পুড়ে যায়। আশংকাজনক অবস্থায় তাদের দুপুর ১২ টার দিকে মাগুরা সদর হাসপাতালে আনা হলে কিছুক্ষনের মধ্যে শিশুটির মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে বিকাল ৪ টার দিকে গৃহবধু অনিমাও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

মাগুরা সদর হাসপাতালে সার্জারী কনসালটেন্ট ডাঃ শফিউর রহমান জানান, গৃহবধূ অনিমার অবস্থা আশংকাজনক। তার শ্বসনালীসহ শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলেও বিকালে মারা যায়।

শালিখা থানার এএসআই হাফিজুর রহমান জানান, তারা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন শ্বশুর বাড়ির লোকেদের অত্যাচারে গৃহবধূ অনিমা শিশু কন্যাকে নিয়ে আত্মহত্যার জন্য শরীরের আগুন দেয়। দুপুরে শিশুটি মারা গেলেও বিকালে মা অনিমা মারা যায়। এ বিষয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ডিসি/এএস/অক্টোবর ০৮, ২০১৫)