কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জ শহরের আলোরমেলা এলাকায় তৎকালীন বিএনপি সরকারের সময় ২০০৬ সনে প্রায় পাঁচকোটি টাকা ব্যয়ে স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করা হয়।

ঐ বছরের ৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্টেডিয়ামটি উদ্বোধন করেছিলেন। পরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এর নামকরণ করা হয় সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্টেডিয়াম। কিন্তু ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণের কারণে স্টেডিয়ামটি নির্মাণের পর থেকেই প্রায় পরিত্যক্ত রয়েছে। কর্তৃপক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণা না করলেও প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এক প্রকার পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্টেডিয়ামটি।

এখানে কোন ফুটবল বা ক্রিকেটের আসর হয় না, এমনকি ছোটখাট খেলাধুলাও করা যায় না। ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণের কারণেই স্টেডিয়ামটি খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত থাকায় স্টেডিয়ামের পাকা গ্যালারি ভেদ করে গজিয়েছে গাছ-গাছরা। ভিতরে খেলার মাঠটি এ্যাবড়ো থেবড়ো। বৃষ্টি হলে পানি জমে যায়। খেলার অনুপযোগী থাকায় এ মাঠে কোন খেলাধুলার আয়োজন হয় না। স্টেডিয়ামটি পরিত্যক্ত থাকায় হতাশ এখানকার ক্রীড়ামোদিরা।

এ ব্যাপারে তরুন ক্রীড়ামোদি আনোয়ার হোসেন বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্টেডিয়ামটি অবহেলা অযত্নে পড়ে থাকার কারণে নিয়মিত খেলাধুলা আয়োজন করছে না কর্তৃপক্ষ এর ফলে প্রতিনিয়ত সন্ধ্যার পরে বসছে মাদকসেবিদের আড্ডা।

অন্যদিকে অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু, সভাপতি, জেলা ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন, কিশোরগঞ্জ তিনি বলেন ২০০৬ সনে এই স্টেডিয়াম নির্মান করা হয়েছিল কিন্তু নির্মাণের সময়েই ত্রুটিপূর্ণ ছিল, নিম্নমানের কংক্রিট, ইট, বালু, সিমেন্ট দিয়ে কাজ করার ফলে অল্পদিনেই বেহাল অবস্থা। বিভিন্ন জায়গায় ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে।

তবে আশার কথা গত কিছুদিন আগে স্টেডিয়ামটি খেলাধুলার উপযোগী করার জন্য সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী সম্প্রতি ৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করেছেন। এ টাকায় মাঠে মাটি ফেলা ও গ্যালারির সংস্কার করা হচ্ছে। কিন্ত স্টেডিয়ামটি পূর্বে যারা সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে নিন্মমানের মালামাল দিয়ে নির্মাণ কাজ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সরকারসহ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

অন্যদিকে দীর্ঘ দিন ধরে সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্টেডিয়ামটি অবহেলা অযত্নে পড়ে থাকা এবং ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণের জন্য যারা দায়ি তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা তা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক জিএসএম জাফরউল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রতিনিধিকে জানান, স্টেডিয়ামটি সংস্কার করে খেলাধুলার উপযোগী করা হচ্ছে পাশাপাশি ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণের ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দেখা হবে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্টেডিয়ামে খেলাধুলার পরিবর্তে বাণিজ্যমেলা, স্কাউটিং ক্যাম্প, মন্ত্রী কিংবা মহামান্য রাষ্ট্রপতি এলে কাজে লাগে। অন্যথায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা করা জন্য জায়গা পাওয়া যায় না অথচ বিশাল এক মাঠ পড়ে রয়েছে কিন্তু খেলার পরিবেশ নাই। স্টেডিয়ামটি মেরামত করে খেলার উপযুক্ত করে তোলার জন্য তরুন ক্রীড়ামোদিসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ সরকারসহ ও কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

(পিকেএস/এলপিবি/অক্টোবর ১০, ২০১৫)