মদন (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি: গ্রামীণ ব্যাংক, চানগাঁও, মদন শাখার গ্রাহকদের কোটি টাকা আত্মসাৎ করে শাখা ব্যবস্থাপকসহ তিন কর্মকর্তা পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রতিদিন গ্রাহকরা তাদের পাওনা টাকা নেওয়ার জন্য ব্যাংকে এসেও কোন সুরাহা করতে পারছে না। ফলে গ্রাহকরা নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

গ্রাহক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ ব্যাংকের সুনামের প্রেক্ষিতে এলাকার প্রভাবশালীগণসহ হতদরিদ্র লোকজন তাদের আমানতের টাকা উক্ত ব্যাংকে জমা রাখেন। সুচতুর শাখা ব্যবস্থাপক শিব্বীর আহম্মদ, শাখার সিনিয়র কেন্দ্র ব্যবস্থাপক (ক্যাশিয়ার) আসাদুজ্জামান খোকন ও সিনিয়র কেন্দ্র ব্যবস্থাপক সিলেকশন গ্রেড বদিউজ্জামান তালুকদারের যোগসাজশে গ্রাহকদের জমাকৃত টাকা চেক ও পাশ বহিতে স্বাক্ষর করে লেজার বহিতে এন্ট্রি না করে টাকা আত্মসাৎ করেন। ঘটনাটি প্রকাশ হলে ৩০ আগস্ট সিনিয়র কেন্দ্র ব্যবস্থাপক সিলেকশন গ্রেড বদিউজ্জামান তালুকদার কর্মস্থল থেকে পালিয়ে যায় এবং ১৩ সেপ্টেম্বর সিনিয়র কেন্দ্র ব্যবস্থাপক (ক্যাশিয়ার) আসাদুজ্জামান খোকন পালিয়ে যায়। সর্বশেষ ১৩ অক্টোবর শাখা ব্যবস্থাপক শিব্বীর আহম্মদ ভাড়াটিয়া বাসা থেকে যাবতীয় মালামাল নিয়ে রাতের আঁধারে পালিয়ে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রাহকদের মাঝে তোলপাড় শুরু হয় এবং গ্রাহকগণ অনিশ্চয়তায় পড়ে।

সেবা লাইব্রেরির মালিক শামছুল হক জানান, তিনি গ্রামীণ ব্যাংকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা রশিদমূলে জমা দেন। কিন্তু লেজার বহিতে ৫'শ টাকা জমা আছে।

পপির নতুন আলো এনজিওর শাখা ব্যবস্থাপক নাজমুল হক জানান, তার ৩৯টি গ্রুপের ১০ লাখ টাকা পাশ বহির মাধ্যমে জমা হয়। কিন্তু লেজার বহিতে টাকা জমা হয় নাই।

প্রধান শিক্ষক আবু হান্নান তালুকদার জানান, তিনি ১ লাখ ৩ হাজার টাকা রশিদ মূলে জমা করেন। কিন্তু লেজার বহিতে ৩ হাজার টাকা জমা হয়েছে।

মাই ওয়ান টিভি এজেন্ট পুতুল মিয়া জানান, তিনি রশিদ মূলে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা জমা দেন, লেজার বহিতে ১০ হাজার টাকা জমা হয়েছে। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অডিট ছাড়া গ্রাহকদের কোন টাকা পরিশোধ না করায় আমরা বিপাকে পড়েছি।

এ ব্যাপারে গ্রামীণ ব্যাংকের জোনাল অফিসের প্রতিনিধি মদনে কর্মরত মোঃ ইলিয়াছ হোসেনের কাছে আমাদের সংবাদদাতা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, ২০১৩-২০১৫ পর্যন্ত সময়ে দেড় মাস অডিট করে ৬০ জন গ্রাহকের ৪২ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর সত্যতা পেয়েছি তবে টাকার পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। তিন কর্মকর্তা পালিয়ে যাবার বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেন এবং আরো যেসব গ্রাহক টাকা জমা দিয়েছে প্রমাণাদি নিয়ে আসলে তাদের টাকা ব্যাংক ফেরত দেওয়া হবে। তবে অডিট শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভুক্তভোগীদের কোন টাকা পরিশোধ করা হবে না।

(এএমএ/এলপিবি/অক্টোবর ১৪, ২০১৫)