নড়াইল প্রতিনিধি : দুর্ভোগের এমন অসহায়  চিত্রটি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের চরাঞ্চল থেকে তোলা। মাত্র ৩ কিলোমিটার কাঁচারাস্তার এমন বেহালদশায় এ এলাকার মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যুগ-যুগ ধরে।

দেশীয় ফল-মূল, শাক-সবজী ও মাছের প্রধান উৎস হিসেবে জেলার এ অঞ্চলকে ধরা হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই নাজুক। যার ফলে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ভরা জোয়ারেও অনুন্নত, অজগাঁ হিসেবেই রয়েগেছে গ্রামগুলো।

চরঘোনাপাড়া, পাংখারচর, চরসুচাইল সহ চরপরাণপুর মোট চারটি গ্রামের মানুষের এমন দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সিহানুক রহমান চরএলাকা থেকে নির্বাচীত হওয়ায় আশায় বুক বেঁধেছিল এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। চেয়ারম্যান আশারবাণী ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেলেনও ঠিক সেই ভাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় নির্বাচীত হওয়ার গেল পাঁচবছরেও সড়কগুলো পাকাকরন তো দুরের কথা,খানা-খন্দক গুলোও ঠিক করতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন এলাকার মানুষ। এদুর্ভোগ কেবল বয়োজৈষ্ঠদের বেলায় নয় স্কুলগামী কোমলমতি শিশু-শিক্ষার্থীদেরও দিতে হয় ভোগান্তির চরম মাশুল। কখনো কর্দমাক্ত ভেজা কাপড়ে স্কুল করতে হচ্ছে। কখনো বা আবার ভেজা পিচ্ছিল কাদার রাস্তায় স্কুলে দেরীতে গোমন করায় শিক্ষকদের ধমকের ভয়ে বাড়ি ফিওে যেতে হচ্ছে অনেকের ।

চরপাচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম বলেন, রাস্তা কাঁচা থাকায় আমাদের খুব সমস্যা হচ্ছে, সাইকেল চালিয়ে কাদার রাস্তায় চলাচল করা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার, সময়মত স্কুলে পৌছানোও যায়না। বর্ষার সময় কখনো শিক্ষার্থীদের বই-খাতা পড়ে যায়। কাঁদা লেগে পোশাক নষ্ট হয়ে যায়। ওই স্কুলের শিক্ষার্থী তয়ন, রাফসান, নিশিতা জানায়, স্যান্ডেল- জুতা খুলে এ পথে চলাচল করতে হয়। এতে করে স্কুলে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে।

এমন দুর্ভোগে বিগত দিনে পাশে দাড়াননি কেউই। জেলা প্রশাসক, জেলাপরিষদের প্রশাসক এমনকি জনপ্রতিনিধি সংসদ সদস্যও। তবে সাবেক সাংসদ এসকে আবু বাকের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে ৫ কিঃমিঃ রাস্তা এলজিইডি’র অর্থায়নে পাকাকরনের কথা থাকলেও পরবর্তীতে বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ২ কিঃ মিঃ রাস্তা। বাকি ৩ কিঃমিঃ রাস্তার কোন হদিস নেই। গুরুত্বপুর্ণ একটি রাস্তার এমন চিত্র দেশের সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা ছাড়া আর কিছুই নয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোতালেব বিশ্বাস বলেন, বিগত দিনে যে কাজ হয়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষে ৩ কিঃমিঃ কাঁচা রাস্তার কারণে এলাকার মানুষের চলাচলের ক্ষেত্রে যে সমস্যা হচ্ছে, তা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

(টিএআর/এএস/অক্টোবর ১৪, ২০১৫)