শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুরে প্রিয়া গিনি ঘর নামে একটি জুয়েলারীর দোকানে বোমা ফাটিয়ে ডাকাতি হয়েছে।

বুধবার রাতে শরীয়তপুরে সদর মডেল থানা থেকে মাত্র ৫০ গজ দুরে শত শত মানুষের সামনে ককটেল বোমা ফাটিয়ে একটি জুয়েলারীর দোকানে দূর্ধর্ষ ডাকাতি করা হয়।

একজন পুলিশ কনস্টেবলের সাহসিকতায় মাত্র ১০ মিনিটের ব্যবধানেই ৬ ডাকাতসহ ডাকাতিকৃত স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।

শরীয়তপুর সদর পালং মডেল থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্র সদর মডেল থানা থেকে মাত্র ৫০ গজ দুরে অবস্থিত প্রিয়া গিনি ঘর নামে একটি জুয়েলারির দোকানে ডাকাতি হয়। শত শত মানুষের সামনে বুধবার রাত পৌনে ৮টার দিকে সম্পূর্ন কমান্ডো স্টাইলে ৮-১০টি ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এই ডাকাতি করে ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল। এ সময় জুয়েলারির মালিক মৃদুল কান্তি রায়ের ছেলে শিমুল রায় ও দুই কর্মচারী দোকানে ছিল। বোমা বিস্ফোরন করে চারদিকে আতংক ছরিয়ে শিমুলকে চাপাতি দিয়ে আঘাত করে মাত্র ২ মিনিটের মধ্যেই বিপুল পরিমানের স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতরা।

ডাকাতরা ডাকাতি করে একটি অটোরিক্সায় পালানোর সময় শরীয়তপুর সদর থানার কনস্টেবল দবির হোসেন আরেকটি অটোরিক্সা ভাড়া করে ডাকাতদের পিছু নিয়ে মুঠো ফোনে উর্দ্ধতনদের বিষয়টি জানায়। সে ডাকাতদের ফলো করতে করেত ৪ কিলোমিটার দুরে মাত্র ১০ মিনিটের ব্যবধানে শরীয়তপুর পুলিশ লাইনের সামনে এসে ৬ ডাকাতকে আটক করে পুলিশ।

এ সময় ডাকাতদের কাছ থেকে লুটে নেয়া স্বর্ণের ৪০ জোড়া কানের দুল, ৭৮ টি আংটি, ১ সেট হার, ১টি ব্রেসলেট, ৫টি গলার চেইন, সাড়ে ৯ হাজার টাকা, একটি খেলনা পিস্তল, এক ব্যাগ ককটেল, ১টি ছুরি উদ্ধার করে। ডাকাতদের আটক করে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে রাখা হয়।

আটককৃত ডাকাতরা হলো, শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের পশ্চিম চরোসুন্দি গ্রামের বাবুল মোল্যার ছেলে সজীব মোল্যা (২০), হামেদ তালুকদারের ছেলে নিজাম উদ্দিন (২৫), মান্নান সরদারের ছেলে কবীর হোসেন (২৬), কাশাভোগ গ্রামের মোয়জ্জেম হাওলাদারের ছেলে রাকিব (১৮), উত্তর ভাষানচর গ্রামের ফজলুল হক সরদারের ছেলে আবু বকর (৩৫) ও স্বর্ণঘোষ গ্রামের অটোরিক্সা ড্রাইভার দুলাল। আটককৃত ছয় জনকে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সাথে আরো ৫-৬ জন ছিল বলে জানিয়েছেন শরীয়তপুর সদর থানার ওসি।

গ্রেফতার হওয়া ৬ ডাকাতসহ আরো ৫-৬ জনকে আসামী করে বৃহস্পতিবার পাং থানায় একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

প্রিয়া গিনি ঘর জুয়েলারির মালিক মৃদুল কান্তি রায় বলেন, বুধবার আমি রাত সাড়ে ৭টার দিকে আমার ছেলে শিমুলকে দোকানে রেখে চা পান করার জন্য বাইরে যাই। এর ১০ মিনিট পরে দেখি আমার দোকানের সামনে উপর্যপুরী বোমার বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে। প্রথমে স্থানীয়দের সংঘর্ষ বাধার কথা মনে করি। এরপর দোকানের দিকে এগিয়ে দেখি আমার ছেলেকে চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়েছে। ওর শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। আমার দোকানের সুকেসগুলো ভাঙ্গা। ভেতরে কোন স্বর্ণালংকার নেই। এরপরই জানতে পারি ডাকাতি হয়েছে। পুলিশ হাতেনাতে ডাকাতদের আটক করে আমার মালামাল উদ্ধার করতে পেরেছে এজন্য শরীয়তপুরের সকল পুলিশের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

শরীয়তপুরের সহকারি পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মো. গোলাম রাব্বানী বলেন, বুধবার রাত পৌনে ৮টার দিকে থানা থেকে অনতি দুরে প্রিয়া গিনি ঘর নামক একটি স্বর্ণের দোকানে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দূর্ধর্ষ ডাকাতি করে কয়েকজন। সদর থানার কনস্টেবল দবির হোসেনের বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতায় মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই ডাকাতদের একটি অংশকে আটক করা সম্ভব হয়। তাদের কাছ থেকে লুট হওয়া স্বর্ণালংকারসহ ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়। থানায় মামলা হয়েছে। বাকি ডাকাতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

(কেএনআই/এলপিবি/অক্টোবর ১৫, ২০১৫)