ঝালকাঠি প্রতিনিধি : বহু বছর কেটে গেলেও অবিভক্ত বাংলার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক’র জন্ম স্থান  সাতুরিয়ার মিঞা বাড়ীটি সংরক্ষনে সরকারীভাবে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তবে ব্যক্তি উদ্যোগে সেখানে  একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান চালু করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য প্রবাসি প্রকৌশলী এ কে এম রেজাউল করিম ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই প্রতিষ্ঠানটি করেছেন।

অন্য দিকে ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামের শের-ই-বাংলার সেই বাল্যস্মৃতি বিজরিত নানা বাড়ি মিঞা বাড়িটি এখনও রয়েছে সম্পূর্ন অরক্ষিত ও পরিত্যক্ত অবস্থায়। প্রত্নতত্ব বিভাগের অধীনে থাকা এই বাড়িটির রক্ষনাবেক্ষনে প্রত্নতত্ব বিভাগ উদাসিনতার পরিচয় দিয়েই চলছে।

এদিকে শের-ই-বাংলার স্মৃতি সংরক্ষন সহ তার জীবনীর উপর গবেষনা ও অধ্যায়ন করার জন্য মিঞা বাড়ীর খুব কাছেই সম্পূর্ন বেসরকারী উদ্যোগে নিজস্ব জমিতে নির্মিত হয়েছে ‘শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক রিসার্চ ইনষ্টিটিউট’।

এই ইনষ্টিটিউট’র নিজস্ব দ্বিতল ভবন রয়েছে। ভবনের নিচতলায় রয়েছে একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরী। এর প্রতিষ্ঠাতা যুক্তরাজ্য প্রবাসী প্রকৌশলী এ কে এম রেজাউল করিম সাতুরিয়া গ্রামেরই সন্তান। ধারনা করা হচ্ছে শের-ই-বাংলাকে নিয়ে কাজ করার জন্য বেসরকারিভাবে এটাই দেশের সর্বপ্রথম বড় উদ্যোগ। গত বছর ২৬ অক্টোবর শেরে বাংলার জন্মদিনে এটি উদ্বোধন করেন বরিশাল অঞ্চলের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর মো: হানিফ।

সাতুরিয়া এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক এবং শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হকের নানা বাড়ীর নিকটাত্বীয় আবুল বাশার মিঞা বলেন, ৪ বছর আগে প্রত্নতত্ত বিভাগ মিঞা বাড়ীটি তাদের অধীনে নিলেও এটি সংরক্ষনের কোন উদ্যোগ নেয়নি।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম নিজস্ব অর্থায়নে শের-ই-বাংলার স্মৃতি রক্ষায় উদ্যোগ গ্রহন করায় আমরা তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। পাশাপাশি মিঞা বাড়ীটি যাতে সংরক্ষনের উদ্যোগ নেয়া হয় সরকারের কাছে সে দাবী জানাচ্ছি। মিঞা বাড়ীর প্রতিবেশি শেখ জাহাংগীর ও রাসেল খান জানান, প্রতœতত্ত বিভাগ শের-ই-বাংলার নানা বাড়ীটি তাদের অধীনে নিলেও একটি টিউবওয়েল বসানো ছাড়া আর কোন কাজ করেনি। দেশি বিদেশি পর্যটকরা এখানে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যায়। সরেজমিন মিঞা বাড়ী গিয়ে দেখা যায় সেখানে বর্তমানে ৩ টি পরিবার বসবাস করছে। এরা শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হকের নানার দিকের আত্বীয় স্বজন।

এখানে বসবাসরত হোসনে আরা বেগম ও তাসলিমা বেগম বলেন, অনেকদিন হতেই শুনে আসছি সরকার এখানে ভবন করবে, তবে সেক্ষেত্রে পাশ্ববর্তী কোন জায়গায় আমাদের ঘর উঠিয়ে দিয়ে পূর্নবাসন করতে হবে।

শের-ই-বাংলাকে নিজস্ব উদ্যোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রকৌশলি এ কে এম রেজাউল করিম বলেন, শের-ই- বাংলা এ কে ফজলুল হকের মত নেতার জন্ম আমাদের সাতুরিয়া গ্রামে হওয়ায় আমরা গর্বিত। কিন্তু এই মহান নেতার স্মৃতি রক্ষায় এই গ্রামে কোন সরকারী বা অন্য কোন উদ্যোগ ছিলোনা। তাই আমি গত বছর ‘শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক রিসার্চ ইনষ্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠা করি। এই প্রতিষ্ঠানটিকে আমি জাতীয় ও আর্ন্তজাতিকভাবে জাতির গর্বের একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত করাতে চাই।

(একে/এএস/অক্টোবর ১৫, ২০১৫)