সিলেট প্রতিনিধি : শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলামকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।

শুক্রবার সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে তাকে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুল হকের আদালতে তাকে হাজির করা হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে রাত ১০টার দিকে সিলেটে নিয়ে আসার পর তাকে কোতোয়ালি থানা পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়।

রাতে কামরুলকে সিলেটে নিয়ে আসার পর সংবাদ সম্মেলন করেন সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার কামরুল আহসান। তিনে বলেন, আইনি বাধ্যবাধকতা মেনে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে আদালতে হাজির করা হবে। তবে তিনি কোনো সময় উল্লেখ করেননি।

অন্য আসামিদের মতো কামরুলেরও ১৬৪ জবানবন্দি নেওয়া হবে কিনা?- সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার কোনো প্রয়োজন পড়বে না। কামরুলের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকায় তা তামিল হবে ও সেভাবেই তাকে আদালতে পাঠানো হবে।

এছাড়া রাজন হত্যা মামলায় পুলিশ দ্রুত চার্জশিট দিয়েছে। বিচারও চলছে দ্রুততার সঙ্গে। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে কামরুলের বিচার আদালতে সম্পন্ন হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার পর আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে ১০ জন আসামিকে আটক কর‍া হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইন্টারপোলের মাধ্যমে সৌদি আরব থেকে প্রধান আসামি কামরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। এছাড়া রাজন হত্যা মামলার পলাতক অপর দুই আসামি পাভেল ও শামীমকে গ্রেফতারে তৎপর রয়েছে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রুকন উদ্দিন, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো. রহমত উল্লাহসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে কামরুলকে নিয়ে ঢাকা হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান পুলিশ কর্মকর্তারা। পরে তাকে বিমানবন্দর এপিবিএনের কাস্টোডিতে রাখা হয়।

সেখানে সংবাদ সম্মেলনের পর বিকেল ৪টার দিকে তাকে নিয়ে সড়কপথে সিলেটের উদ্দেশে রওনা হয় পুলিশ। রাত ১০টার দিকে তারা সিলেট মহানগর পুলিশের সদর দপ্তরে এসে পৌঁছান।

কামরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনতে গত রবিবার ১১ অক্টোবর সৌদি আরবে যান সিলেটের তিন পুলিশ কর্মকর্তা। তারা হলেন-পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুবুল করিম, সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) রহমত উল্লাহ ও সিলেট মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আ ফ ম নিজাম উদ্দিন।

উল্লেখ্য, ৮ জুলাই ভোরে ‘চোর’ সন্দেহে শিশু রাজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নির্যাতনের ২৮ মিনিটের ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশে বিদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর সুরঞ্জিত তালুকদার ১৬ আগস্ট ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।

(ওএস/এএস/অক্টোবর ১৬, ২০১৫)