নতুন বাংলাদেশ
(বিজয় দিবসে চোখ উপড়ে ফেলা রুমানা মঞ্জুর ও হাতের কব্জি কেটে ফেলা জুঁইকে উৎস্বর্গ করে)

আকাশে উড়ছে কবিতার গাংচিল
মাটিতে বিষাদ সিন্ধু; গল্পে ও কবিতায়
আচ্ছন্ন মন কারাগার খুলে দিক মুক্তির
দর্শন। আমি ভবিষ্যতের আগুন, সময়ের
খড়-গাদায় জ্বলছি অবিরাম, মুক্তির
নিশ্বাসে লকলকে শিখা হয়ে
জ্বলব আবার এলে ফাগুন
মানুষের মাঝে চাই মানবিকতা, পৃথিবী চাই যুদ্ধবিহীন,
বাংলাদেশ চাই নারী নির্যাতিনহীন
চাই একখণ্ড নির্মল বাসযোগ্য ব্রম্মান্ড।
নক্ষত্রের বুনোহাঁস হতে চাই না।
ডানায় ভর করে উড়তে বল না
আমি মাটির বিষাদ সিন্ধু নই।
স্ব-শক্তিতে মাটিতেই দাঁড়িয়ে রই।

এ মাটি বাংলার জলে ধোয়া, এ মাটি বাংলার গানে বুনানো
শীতলপাটি,এই পাটির ভাঁজে ভাঁজে আমি ও আমরা স্বপ্নের বীজ বুনেছি।
যাব! একদিন আরও অনেকদূর যাব সবুজ-লাল
পতাকা হাতে; নির্জন উপত্যকায় স্বাধীন চেতনার
অবাধ স্বাধীনতা নিয়ে। কব্জিতে শক্তি নিয়ে
শিক্ষার আলোকে ভরে দিতে নতুন প্রজন্মকে।

হে স্বাধীন দেশের মাটি! ফিরিয়ে দাও আমার
কেটে নেয়া কব্জি, আমিও যুদ্ধ করতে জানি।
চোখ দু’টো খুলে নিয়েছে, তবু অবনমিত হবে না জেনো
আমাদের দলবদ্ধ এই লাল-সবুজের পতাকা।
বাতাসে উড়বেই পতপত করে।
কব্জি ও চোখ নিয়েছ যারা তাদের জন্য এই শপথ
বাংলার আকাশে উড়বে আমাদের স্বাধীন আঁচল।
এর নাম স্বাধীনতা।
এই বিজয়ে আমার মায়ের রক্ত আছে।
সন্তান হারানোর শোক আছে, স্বামী হারানোর ব্যথা আছে,
তার মেয়েকে ধর্ষণের করুণ আর্তনাদ আছে।
আমাদেরও অবদান আছে।

এই বিজয়ে আমাদের ও সমান অধিকার আছে।
চল্লিশ বছরের এই বিজয় দিবস হোক নারী নির্যাতনহীন
'নতুন বাংলাদেশ' -ঘোষণার গৌরবোজ্জ্বল দিন।