জকিগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি : বিজয়া দশমীতে সীমান্ত উপজেলা জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর ভারত বাংলার দুই তীরের কাষ্টমঘাটে বৃহস্পতিবার বসেছিলো দুই বাংলার মানুষের মিলনমেলা। চোখের জল আর হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসায় দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে বিদায় জানাতে কুশিয়ারার দুই তীরে জড়ো হন হাজারো পুজারী ভক্ত অনুরাগী, দর্শনার্থী ও শুভার্থীরা।

এ উপলক্ষে হিন্দু, মুসলিম পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠে জকিগঞ্জ পৌর শহরের কাষ্টমঘাট ও ভারতের কাষ্টম ঘাটস্থ অখন্ড মন্ডলী মন্দিরের প্রাঙ্গন। ধর্ম যার যার উৎসব সবার এ সত্য আবারো প্রমানিত হলো জকিগঞ্জে।

বাঙ্গালী হিন্দুদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপুজার সমাপনীর মিলন মেলায় হিন্দু সম্প্রদায়, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ জকিগঞ্জের সর্বস্থরের মানুষ তাতে অংশ নেয়। পুলিশ, বিজিবি, ডুবরি, আনসার সদস্যরা ছিল সর্তক অবস্থায়। ঢাক এবং শঙ্খ ধ্বনির আওয়াজে মূখরিত হয় গোটা এলাকা। মর্তলোক থেকে কৈলাশে দেবীকে বিদায় জানাতে নেচে গেয়ে মাতোয়ারা হন ভক্তরা।

ভক্তরা সেজেছিলেন উৎসবের বর্ণিল রঙে। বিজিবি এবং বিএসএফের সদস্যরাও মেতে উঠেছিলেন উৎসবে। কুশিয়ারা নদীতে উভয় পারের প্রতিমা বিসর্জনে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়। জকিগঞ্জের ৯৫ টি পূজা মন্ডপ থেকে শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা নিয়ে আসেন ভক্তরা। বিসর্জনের দিন উৎসবে মেতে ওঠে সীমান্ত ঘেঁষা এ নদীপাড়ের নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষ। গভীর রাত পর্যন্ত চলে এ উৎসব।

দীর্ঘদিন ধরেই এ উৎসব চলে আসছে কুশিয়ারা নদীতে। জকিগঞ্জ পূর্জা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নীল মনি রায় ও সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চন্দ্র নাথ জানান, জকিগঞ্জে ৯৫ টি পুজা মন্ডপেই শান্তিপূর্ণভাবে পূজা শেষে কুশিয়ারার কাষ্টমঘাটে প্রতিমা বিসর্জনে সকল ধর্ম বর্ণের মানুষের মিলন মেলা যেন সৌহার্দ ও সম্প্রীতির মেলাবন্ধন।

এদিকে প্রতিমা বিসর্জনের পূর্ব রাতে শারদঞ্জলী ফোরাম জকিগঞ্জ উপজেলা শাখার উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপে কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় বিজয়ীদের মধ্যে গীতা দান করেন জকিগঞ্জ উপজেলা সারদঞ্জলী ফোরামের সভাপতি ডা. কৌশিক রায়। অনান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ফোরামের সাধারণ সম্পাদক দিপক পাল, সদস্য অরুপ পাল, সৌরভ রায়, শ্রীভাস রায়, ডিলু রায় প্রমুখ।

(এসপি/এএস/অক্টোবর ২২, ২০১৫)