ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : সংখ্যালঘুদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও আইন ও শালিস কেন্দ্রের পরিচালক সুলতানা কামাল।

তিনি বলেন, ‘এদেশ আমার আপনার সবার। এখানে যারা হিন্দু মুসলমানের বিভেদ সৃষ্টি করে তারা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না। তারা দেশ ও জাতির শত্রু।

তিনি আরো বলেন, রণবাগ এলাকার সংখ্যালঘুদের আর্তনাদ আমাকে হতবাগ করেছে। তারা এই দেশেই থাকতে চায়। নিরাপত্তা নিয়ে তারা খুবই সংশয়। মানবাধিকার কর্মীরা যাওয়ার কথা শুনে সাংসদের লোকজন চা বাগানের গাছ তুলে ফেলেন ও দখলকৃত শশ্মান ঘাটের রাস্তাও খুলে দেন। এ থেকেই বুঝা যায় সাংসদের জমি দখল করার প্রক্রিয়া। তারা কান্না জড়িত কন্ঠে অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় সাংসদ ক্ষমতাশালী। তাদের বিরুদ্ধে কোন কথা বলা যায় না। কিছু বলতে গেলেই চলে জমি দখল আর নির্যাতন।

রবিবার ঠাকুরগাঁওয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার রণবাগ সংখ্যালঘুদের জমি দখল এলাকা পরিদর্শন শেষে সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ব্যারিষ্টার সারা হোসেন, সুপ্রীম কোর্টের এ্যাড. তোবারক হোসেন, এএলআরডিনির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, অর্পিত্ত সম্পত্তি আইন প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সমম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য কাজল দেবনাথ, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু তোরাব মানিক।

উল্লেখ্য, সাংসদ দবিরুল ইসলাম তাঁর সংসদীয় আসনের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের রনবাগ নামক স্থানে রনবাগ ইসলামী টি এস্টেট কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি চা-বাগান গড়ে তুলেছেন। ১০৬ একর আয়তনের ওই বাগানের মাঝখানে অকুল চন্দ্র সিংয়ের ২১ বিঘা জমি, ভাকারাম সিং ও জনক চন্দ্র সিংয়ের ২৭ বিঘা জমি, থোনরাম সিংয়ের ২৪ বিঘা, ক্ষুদনলালের ২৪ বিঘা চা-বাগানসহ ১০টি হিন্দু পরিবারের চা-বাগান ও আবাদি জমি রয়েছে। সম্প্রতি ওইসব জমি সাংসদের লোকজন সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চালিয়ে জমি দখল করে চা বাগান গড়ে তুলেছে। সাংসদ সংসদ্যের লোকের ভয়ে ওই সময় কিছু সংখ্যালঘু পরিবার ভারতে পালিয়ে যায়। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। রবিবার (২৫ অক্টোবর) আইন ও শালিস কেন্দ্রের পরিচালক সুলতানা কামাল ওই এলাকা পরিদর্শন করে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন ও জমি দখলের সত্যতা পেয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন।

(জেএবি/এএস/অক্টোবর ২৬, ২০১৫)