বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মংলা উপজেলা সংলগ্ন পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের মৃগামারি খালে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে বনদস্যু শিপন বাহিনীর প্রধান শিপন (৩২) নিহত হয়েছেন।

এসময় ঘটনাস্থল থেকে দেশি-বিদেশি ১৮টি আগ্নেয়াস্ত্র ও দুই শতাধিক রাউন্ড গুলি, গুলির খোসা, ধারালো অস্ত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (২৮ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফরিদ আলম জানান, নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে র‌্যাব-৮ এর একটি দল মঙ্গলবার বিকেলে মৃগামারি খাল এলাকায় যায়। এসময় জেলেদের মাধ্যমে তারা খবর পায় যে আট/নয় জন সদস্য নিয়ে দস্যু শিপন বাহিনীর প্রধান শিপন ওই এলাকায় অবস্থান করছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব সদস্যরা খাল সংলগ্ন বনের ওই অংশটি ঘিরে রাখে। এ সময় দস্যুদের আত্মসমর্পণের জন্য হ্যান্ড মাইকে বার বার ঘোষণা দেওয়া হয়।

এভাবে সারারাত এলাকাটি ঘিরে রাখার পর বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে দস্যুরা র‌্যাবের অবস্থান লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করে। এসময় র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। ঘণ্টা খানেক বন্দুকযুদ্ধের পর দস্যুরা পিছু হটে। পরে র‌্যাব সদস্যরা বনে তল্লাশি চালিয়ে দস্যুদের আস্তানার সন্ধান পায়। সেখান থেকে গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিসহ বিভিন্ন মালপত্র উদ্ধার করে।

স্থানীয় জেলেরা নিহত ব্যক্তিকে বনদস্যু শিপন বাহিনী প্রধান শিপন বলে শনাক্ত করেছে বলেও জানান তিনি।

উদ্ধার করা আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে বিদেশি সাতটি একনলা বন্দুক, দু’টি দোনলা বন্দুক, দু’টি কাটা রাইফেল, ১৪৫ রাউন্ড গুলিসহ দু’টি দশমিক ২২ বোর রাইফেল, পাঁচটি ওয়ান শ্যুটার গান, বন্দুকের ১৯টি তাজা গুলি ও ৪৩টি গুলির খোসা, গুলি রাখার দু’টি তোষদানি, পাঁচটি ধারালো অস্ত্র, একটি মোবাইল ফোন সেট, মুক্তিপণ ও চাঁদা আদায়ের প্রচুর টোকেনসহ দস্যুদের ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম রয়েছে।

র‌্যাব জানায়, নিহত শিপন আট/১০ জনের একটি দল গঠন করে নিজ নামে দস্যু বাহিনী পরিচালনা করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে সুন্দরবনে জেলে ও বাওয়ালীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, মাছ ও জাল লুটসহ অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের অনেকগুলো অভিযোগ রয়েছে।

র‌্যাব-৮ এর উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবির জানান, নিহত দস্যুর মৃতদেহ ও উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্র মংলা থানায় হস্তান্তর করা হবে।

(ওএস/অ/অক্টোবর ২৮, ২০১৫)