কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় রোপা আমন ধান ক্ষেতে পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণে বহু ধানগাছ ঝলসে গেছে। কোথাও কোথাও পুরো জমির ধানই লাল বা হলুদ হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। আবার কোথাও জমির আংশিক ধান ঝলসে গেছে।

এ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এলাকার কৃষকরা। আমন জমিতে ধানের শীষ বেরুনোর সময় পাতামোড়ানো পোকার আক্রমণে বিস্তীর্ণ জমি বিরাণ ভূমিতে পরিণত হচ্ছে। এই সময়টাতে জমির ধান নষ্ট হয়ে গেলে আর এই ক্ষতি পোষানোর সময় পাওয়া যাবে না। ফলে কৃষকের পুরো টাকাই ভেস্তে যাবে। ফলে দেনার দায় মাথায় নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের।

সদর উপজেলার যশোদল ইউনিয়নের মধুনগর এলাকার বেশ কয়েকজন চাষী জানান, সমস্ত ক্ষেত পাতা মোড়ানো রোগে ঝলসে গেছে।এগুলো গরু-বাছুরও খায় না । সমস্ত জমি সাদার পর সাদা হয়ে গেছে । তারা আরও জানান তাদের মধ্যে অনেকে সমস্ত পুঁজি বা হালের গরু বিক্রি করে আমনের চাষ করেছেন। এ ক্ষতি কীভাবে কাটিয়ে উঠবেন এ নিয়ে উৎকন্ঠায় রয়েছেন তারা।

উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো.তৌহিদ আলী জানান, যেসব জমিতে পোকা ধরেছে, কেরোসিন মিশ্রিত পানিতে দড়ি ভিজিয়ে সেসব জমিতে টেনে দেয়ার জন্যও পরামর্শ দিয়েছেন। ফলে এক অচিরেই সমস্যাটি কেটে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

জেলা সদর ছাড়াও বাজিতপৃর, কুলিয়ারচর, নিকলী, করিমগঞ্জ ও কটিয়াদী বিভিন্ন উপজেলায় পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ বেশি দেখা দিয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ৭৪ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ করা হয় এর মধ্যে ২৯৫হেক্টর জমিতে পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম জানান, অনেক জমিতে রেইনট্রি গাছের ছায়া পড়েছে । যে কারণে ওইসব জমির ধানগাছ একটু বেশি রসালো হয়ে পোকার আক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে। এছাড়া এবার বৃষ্টিপাতও বেশি হয়েছে।

এসব কারণেও জমি রসালো হয়ে যাওয়ায় পোকার প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শন করে কৃষকদেরকে পরামর্শ দেয়ার জন্য।প্রতিটি ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাসহ কৃষি বিভাগের সকল স্তরের কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

(পিকেএস/এএস/নভেম্বর ০২, ২০১৫)