শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরে এলজিইডি‘র নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে নিয়ম বহিভূর্তভাবে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে শরীয়তপুরের ঠিকাদারেরা। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলী আর্থিক সুবিধা গ্রহন করে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। সোমবার বিকেলে জেলার গোসাইরহাট উপজেলা পরিষদের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ সব অভিযোগ করেন ঠিকাদাররা।

ঠিকাদারদের সংবাদ সম্মেলন ও এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের উপজেলা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জেলার গোসাইরহাট উপজেলার গোসাইরহাট-চরমনপুরা নামক একটি সড়কের সাড়ে ৫ কিলোমিটার সংস্কারের (পুণ. নির্মাণের) জন্য ৩ কোটি ১৭ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫৪ টাকা প্রাক্কলিত মূল্য নির্ধারণ করে দরপত্র আহবান করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। ৩ মার্চ ছিল দরপত্র জমা ও ওপেনিং এর শেষ তারিখ। দরপত্রে ৮ টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহন করেন। এর মধ্যে মেসার্স সোনালী স্টোর এন্ড মিজান এন্টারপ্রাইজ (যৌথ) ২ কোটি ৫৪ লাখ ২৯ হাজার ৭০৬ টাকায় ও মেসার্স শহীদ এন্টারপ্রাইজ এবং সামিম ট্রেডার্স (যৌথ) ২ কোটি ৫৮ লাখ ৩২ হাজার ৩ শত ৫০ টাকা মূল্যে দর পত্র জমাদেন। নিয়ম অনুযায়ী সর্বনিম্ন দরদাতা কাজ পাওয়ার কথা থাকলেও উচ্চ মুল্যেই মেসার্স শহীদ এন্টারপ্রাইজ এবং সামিম ট্রেডার্স (জেভি) কে কাজ করার অনুমোদন দেয়া হয়। ফলে কাজ বঞ্চিত ঠিকাদারেরা সংবাদ সম্মেলন করেন।
অনিয়মের অভিযোগ এনে দরপত্রটি পূনরায় মূল্যায়নের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলীর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন মেসার্স সোনালী স্টোর এন্ড মিজান এন্টারপ্রাইজ (জেভি) এর সত্বাধিকারীদ্বয়। তাতেও কোন ফল পাওয়া যায়নি।
এদিকে কাজ পাওয়া ঠিকাদারকে কার্যাদেশ প্রদানের পর পরই ঠিকাদার প্রথমেই সড়কের দুই পাশে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করেন। মাটি ভরাটের কাজ সরেজমিন পরিদর্শন করেও সেখানে ব্যাপক অনিয়ন লক্ষ করা গেছে। এ অনিয়মের কারনে গোসাইরহাট উপজেলা প্রকৌশলী মৌখিকভাবে মাটি ভরাটের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও ঠিকাদার কাজ বন্ধ করেনি। ফলে কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম ঠিকাদারের অনিয়মতান্ত্রিক কাজ তদারকির দায়িত্ব থেকে সড়ে এসেছেন বলে জানান তিনি।
প্যারেন্টস এন্টারপ্রাইজ এর পক্ষে দরপত্রে অংশগ্রহন করা ঠিকাদার ও গোসাইরহাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাজাহান দেওয়ান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সর্ব নিন্মদরদাতাকে কাজ না দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী তার পছন্দের লোককে কাজ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, প্রকল্পটিতে ৮০ লাখ টাকার মাটি ভরাটের কাজ ধরা হয়েছে। যা ১০-১৫ লাখ টাকার মধ্যেই করা সম্ভব ছিল। সরকারি টাকা আত্মসাত করতেই প্রকৌশলী বারতি মুল্য দেখিয়েছেন। সরকারি অর্থ বাঁচাতে সঠিক ভাবে প্রকল্পটির ব্যয় নির্ধারন করে পুনরায় দর পত্র আহ্বানের দাবী জানিয়েছে তিনি।
কাজপ্রাপ্ত ঠিকাদার শামীম আহমেদ বলেন, আমি নিন্মদরে কাজ নিয়ে সরকারর টাকা সাশ্রয় করেছি। আমি কাজের কোথাও কোন অনিয়ম করিনি।
গোসাইরহাট উপজেলা প্রকৌশলী অরবিন্দু রায় বলেন, ঠিকাদার আমাদের নির্দেশিত উপায়ে কাজ না করার কারনে আমি তাকে মাঠি ভরাটের কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বলেন, সম্পূর্ন নিয়ম অনুসরণ করেই প্রাপ্য ঠিকাদারকে কাজ দেয়া হয়েছে। এখানে কোন পক্ষপাতিত্ব, অনিয়ম বা দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়নি।

(কেএনআই/এএস/মে ২৬, ২০১৪)