সোনার তরী( এ সময়ের ছড়া)
আসলাম সানী
পিতাকেই মনে পড়ে
যখন – নীল আকাশে
চন্দ্র-সূর্য ওঠে
মুক্ত হাওয়ায়-মুগ্ধ পাখিরা ছোটে
রিমঝিম ঝিম বৃষ্টি যখন ঝরে
মুজিবের কথা মনে পড়ে আমার
পিতাকেই মনে পড়ে,
ঢেউয়ের ছন্দে – জীবনানন্দে
নায়ের মাঝি ছোটে
ঝিলের জলে শাপলা – শালুক
সুখ-স্বপ্নে ফোটে
হৃদয়টা দুলে ওঠে
তখন আমার মন টেকে না ঘরে
দুরন্ত আমি ছুটে যাই যেনো
মাঠ-ঘাট চরাচরে
প্রাণ যে কেমন করে
মুজিবের কথা মনে পড়ে যায়
পিতাকেই মনে পড়ে,
কৃষক মাঠে – শ্রমিক খাটে
উৎপাদনে ভরে
উন্নয়নে – অগ্রগতির
দেশটা সবাই গড়ে
তখন আমার শ্রেষ্ঠ বাঙালি
পিতাকেই মনে পড়ে,
পাহাড়ে শান্তি – সীমানা প্রাপ্তি
সমুদ্র আয়ত্তে আসে
জনকের আশা – বাঙালির ভাষা
বঙ্গদুহিতা হাসে
সোনার ছেলেরা বিশ্ব জুড়ে
বিজয় – আনন্দে ভাসে
লাল সবুজের পতাকা ওড়ে
আকাশে ও বাতাসে –
বীর বাঙালি গর্বে তোমার
মনটা কেমন করে?
স্বাধীনতার মহান নেতা
পিতাকেই মনে পড়ে
বাংলার ঘরে ঘরে
বাঙালির অন্তরে।
রব্বানী চৌধুরীর ছড়া
১,
নদী ভরা জল ছিল মাঠে মাঠে ধান
ঘাটে ঘাটে নাও ছিল হাটে হাটে গান।
বটগাছ কই গেল পিচঢালা পথ
ভাই ভাই মিল নেই ঘরে ঘরে মত!
গাছপালা কেটে কেটে পরিবেশ ফাঁদে
হিন্দুরা চলে গেছে সারা গাঁও কাঁদে!
সেই গাঁয়ে এই গাঁয়ে নেই কোন মিল
সেই গাঁয়ে পড়ে আছে আমাদের দিল।
২,
তুকতাক তুকতাক
জাপানের কাওয়াচাকি
ঘুম থেকে ওঠে রোজ
পরোটার তাওয়া চাখি!
চাখি মানে স্বাদ নেই
ঘি পরোটা বাদ নেই
ইশকুলে যেতে হবে
দেই না ত নাওয়া ফাঁকি।
৩,
মোবাইলে কল দে
ফুলগাছে জল দে!
ফুলগাছ হাসলো
ছাগলটা আসলো!
ছাগল রে! দুধ দে !
খোকা যাবে যুদ্ধে !
যুদ্ধে না, পড়াতে
গাছ কাটে করাতে!!
করাতের শব্দ
খোকা করে জব্দ।
গাছ কাটা বন্ধ
শেষ হলো দ্বন্দ্ব !
পরিবেশ বাঁচল
গাছে পাখি নাচল!
শেখর বরণ
বাংলাদেশের ছেলে
বুক উচিঁয়ে বলো, আমি বাংলাদেশের ছেলে
আমার পিতা এই বাংলার চাষী কিংবা জেলে ।
বাংলা আমার মায়ের ভাষা বাংলা আমার মা
এই বাংলাকে ছেড়ে আমি কোথাও যাবো না
বাংলায় আমি স্বপ্ন দেখি বাংলায় বুনি ঘর
এই বাংলায় জন্ম আমার শত জনমের বর
কে আমায় বলে বারবার দেশ ছেড়ে চলে যা ?
এই বাংলায় জন্মেছি যখন কোথাও যাবো না
বাংলায় আমার ভিটে-জমিন অন্নে পূর্ণা মা
মা’কে ছেড়ে কোথায় যাবো? সব পথ অচেনা
বংগভংগে হয়েছি আমি নিজ দেশে পরবাসী
প্রতিদিন তাই মূত্যু ঘটে প্রতিদিন ফিরে আসি
সেদিন থেকেই প্রার্থনা ছিলো কীর্তিমান এক নাম
জাতির জনক বংগবন্ধু শেখ মুুজিবর রহমান
দেশকে ছেড়ে যাবোনা আমি যতদিন আছে প্রাণ
গলা ছেড়ে গেয়ে যেতে চাই বাংলাদেশের গান
বুক উচিঁয়ে বলো, আমি বাংলাদেশের ছেলে।
বাবুল তালুকদার
শ্রেষ্ঠনেতা শেখ মুজিব
দুর্গম পথপাড়ি দিয়ে তুমি
করেছো স্বাধীন দেশ
বাঙালি মায়ের চোখে মুখে আজও
কুয়াশা ঝরছে বেশ।
বুলেটের আঘাতে রক্ত ঝরানো
শত্রু বাহিনীর দল
অমর হয়েছে জাতির পিতা
বাঙালির চোখে জল।
বজ্রকন্ঠে কবির কবিতা
বেজে ওঠে সারা বিশ্বে
মুক্তিয়োদ্বা বাংলার সৈনিক
জনতার মঞ্চে শীর্ষে।
বঙ্গবন্ধুর সেনা সৈন্যরা
প্রস্তুত আছে আজও
বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে বেড়ায়
রাজাকারদের নাই লাজও।
এই বাংলায় বিচার হয়েছে
রাজাকারদের ফাঁসি
মুক্তিসেনা নীরিহ মানুষের
চোখে মুখে আজ হাঁসি।
বাঙালিদের আজ শ্রেষ্ঠনেতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব
দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে তিনি
রেখে যায় একটি সজিব।
ইউসুফ রেজা
ভিজে বিড়াল
বিড়াল নাকি ভুলেও কভু
পরের জিনিস খায় না
মাছ ভাজাটা পাতে দিলেও
উল্টাতে সে যায় না।
নেংটিরা তার ভীষণ নেওটা
অন্য কোনও দায় না,
অবৈতনিক চাকরি নিয়ে
তাই সে গেল চায়না।
ইঁদুর ছানার পাহারাদার
তাও নেবেনা মায়না।
আসলাম প্রধান
ঝগড়াটে শেয়াল
ঝগড়াটে দুই শেয়াল-
বনকে তারা দু'ভাগ করে
মাঝখানে দেয় দেয়াল
যার ভাগে যায় পুকুর নালা
পায় সে খেতে জল
যার ভাগে যায় ফলের বাগান
পায় সে খেতে ফল |
কেউ বা মরে জল পিপাসায়
কেউ ভিটামিন বি এ
এই সুযোগে মোটা তাজা
দুই শেয়ালের পি এ !
জুলফিকার আলী
শীতের ছড়া
১,
মাঘের আদর,শীতের চাদর,
গাঁয়ে দিয়ে খোকা,
কাঁথা কম্বল,শীতের সম্বল,
মুড়ি দিয়ে লোকা|
ঠকঠকানি শীত,গাইছে গীত,
পৌষ-মাঘের ধারায়,
পথের পাশে,কষ্টে কাশে,
শীত বাঘের তাড়ায়|
খোকা কস!খেজুরের রস,
খেতে লাগে ভালো,
পিঠাপুলির ধুম,ভাঙ্গে ঘুম,
সূর্যের ভাগে আলো|
হিমেল হাওয়ায়,পরশ পাওয়ায়,
খোকা বলল হেসে,
শীত রাণী,আদ্রে টানি,
নিয়ে চলল দেশে!
নিয়ে আমায়,শীত মামায়,
লিখল গীতের ছড়া,
শীতের দেশে,ঘুরে শেষে,
লিখলাম শীতের ছড়া|
২.শীতবাবা
সূর্য্যি মামা মুখ লুকায়
নেই কোথাও তাপ,
বরফ জমে হয়েছে ক্ষীর
পড়ছে শীতের চাপ|
এমন শীতে কাঁপছে সবাই
খোকাও কাঁপে বেশি,
বাঘাবাঘা বীর,কেঁপে অস্থির
শীতটা কোন দেশি?
কাঁথা কম্বল মুড়ি দিয়ে
লুকায় লেপের তলে,
হিম পড়ে টুপ টাপ
শীতের কথা বলে|
তখনি খোকা জ্বালালো আগুন
চলে এলো তাপ,
বলল সবাই হেসে শীতবাবা
করে দে'না মাপ|
৩.শীতের পোশাক
পথের পাশে ঘুমায় ওরা
নেই কাঁথা-কম্বল,
এমন হাড় কাঁপুনি শীতে
কি তাদের সম্বল?
তোমার তো অনেক আছে
একটা তাদের দাও,
দানে করলে খোদা খুশি
দলিলে খবর নাও|
আল মামুন
শীত বুড়ি আসছে
হিম হিম লাগছে
ঠোঁট দুটো কাঁপছে,
হাঁটু দুটো অবিরাম
ঠক ঠক বাজছে ।
হেলে দুলে হাঁটছে
শীত বুড়ি আসছে,
পাতাগুলো গাছ ছেড়ে
কোথা উড়ে যাচ্ছে?
সূর্যের তেজও যেন
আজ ভয় পাচ্ছে,
হন হন তাই বুঝি
দূরে ছুটে যাচ্ছে ।
সাকিব হোসাইন শাকিল
আমার গ্রাম
সবুজ শ্যামল গ্রামটি
আমার গাছেগাছে পাখি,
পরাণ জুড়ায় গ্রামটি দেখে
জুড়ায় দুটি আঁখি ।
ঝিলিক খ্যালে সোনা রোদ
শিশির ভেজা ঘাসে,
রঙবেরঙে প্রজাপতি
গায়যে চারিপাশে ।
রুপালি এক বিল আছে
গ্রামের শেষ প্রান্তে,
শাপলা শালুক পদ্ম পাতা
যায় যে সবাই আনতে ।
রাতের আধার হয়না কালো,
চাঁদ এখানে দেয়যে আলো ।
গ্রামটি আমার রুপে ঘেরা
সব গ্রামের চাইতে সেরা।