রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও জেলা জুড়ে চলছে কুকুরের রাজত্ব। এদের বিচরণে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে মানুষ। সাধারণ মানুষের নির্বিঘ্নে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ভয়ে শিশুরা স্বাদছন্দে স্কুলে যেতে পারছেনা।

নামাজিরা ফজরের সময় কুকুরের ভয়ে অনেকে মসজিদ ছেড়ে বাড়িতেই নামাজ আদায় করছেন। সর্বত্রই কুকুর যেন মানুষের কাছে আতংক হয়ে দাড়িয়েছে। দখল করে নিয়েছে তারা রাস্তা, হাট-বাজার। এরা দলবদ্ধ হয়ে মানুষের উপর আক্রমণ করে কামড় দেয়। ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলে সমস্ত শরীর।

এ কারণে জলাতঙ্কে রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে। এদের অবাধ বিচরণে রাস্তায় মোটর সাইকেলের সাথে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটছে হার হামেশাই। এমনকি এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হানিরও কথা শোনা যায়। দিন দিন বাড়ছে কুকুরের কামড়ের রোগী। সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে প্রতিদিন রোগী আসতে দেখা যাচ্ছে। ঔষধ বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্যমতে তারা প্রতিদিন ডজন খানেক করে জলাতঙ্ক প্রতিশোধক ইনজেকশন বিক্রী করে থাকেন।

সম্প্রতি উপজেলার পাবলিক পাঠাগার এলাকায় পারুল আক্তারসহ দুই জনের দুইটি ছাগল কুকুরের আক্রমনে মারা গেছে। এমন ঘটনা জেলার সর্বত্রই দেখা যায়। চলতি বছরে উপজেলায় প্রায় তিন শতাধিক মানুষ কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছে। অন্যদিকে একটি এনজিওর তথ্যমতে গত ১ বছরে ২৮ জন মানুষ কুকুরের কামড়ে মারা গেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত ভুক্ত ভোগী মোঃ-রশিদ এ প্রতিনিধিকে আক্ষেপ করে বলেন, মানুষ মারা যায় কিন্তু কুকুর মারা যায় না। কারণ কুকুর মারার ব্যাপারে দাতা দেশ গুলোর নাকি বিধি নিষেধ দিয়েছে প্রাণী হত্যা করা যাবে না। কুকুর একটি প্রাণী একে মারলে দাতা দেশগুলোর সাহায্য বন্ধ হয়ে যাবে। আর সাহায্য বন্ধ হয়ে যাবার ভয়ে কুকুর মারা বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া কুকুর মারতে অনেক টাকার দরকার। তার চেয়ে মানুষ মারা পড়লে ক্ষতি নেই। শিশু ও মুসল্লিদের চলাচলে অতিষ্ট হয় হোক, কুকুরের ঘেউ ঘেউ চিৎকারে মানুষ ঘুমাতে না পারলেও সমস্যা নাই তবুও কুকুর নিধন করা যাবেনা । এটাই এখন নাকি দেশের নীতিমালা। কুকুরের বংশ বৃদ্ধি রোধ করার কোন দরকার নাই। বিদেশীদের ইচ্ছায় সব। মানুষের জীবনের কোন মূল্য নেই। কুকুরের চেয়ে মানুষের জীবনের মূল্য অনেক কম।

জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, কুকুর নিধন করা যাবে না মর্মে নীতিমালা থাকায় দিন দিন কুকুর বাড়ছে। দলবদ্ধ থাকায় এরা মানুষ পশু পাখির উপর অনায়াসে আক্রমন চালায়। এদের থেকে সাবধান থাকতে হবে। আগের তুলনায় কুকুরের কামড়ের রোগী দিন দিন বাড়ছে।

(কেএএস/এএস/নভেম্বর ১২, ২০১৫)