বাগেরহাট প্রতিনিধি : যৌতুকের দাবিতে দুই কন্যা সন্তানের জননী মিনা বেগম (৩৪)কে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে পুলিশ কনস্টবল কাওসার সেখ। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে পুলিশ সদস্য কাওসার। বৃহস্পতিবার রাতে বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ কনস্টবল কাওসার বর্তমানে গোপালগজ্ঞ জেলায় কর্মরত রয়েছেন।

নিহতের গৃহবধূর মেজ ভাই মো. কামরুজ্জামান খান জানান, ১৯৯৬ সালে বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরতা গ্রামের এন্তাজউদ্দিনের ছেলে কাওসার সেখের সাথে তার ছোট বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে কাওসার যৌতুকের দাবিতে তার বোন মিনাকে চাপ দিতে থাকে। এঅবস্থায় বোনের সুখের কথা ভেবে বোন জামাই কাওসারকে বিভিন্ন সময়ে ৩ লাখ টাকা দেয়। তারপরও মিনাকে বিভিন্ন সময়ে অত্যাচার করত কাওসার। তার বোনকে যৌতুকের দাবিতে কাওসার পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।

বাগেরহাটের সহকারী পুলিশ সুপার জিয়াউল আলম জানান, পুলিশ কনস্টবল কাওসার কিছুটা মাদকাসক্ত ছিল। বৃহস্পতিবার রাতের কোন এক সময়ে সে তার স্ত্রী মিনাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে ঘরের বাইরে তালা লাগিয়ে পলিয়ে যায়। নিহত মিনা বেগমের পাশের কক্ষে তার দুই মেয়ে কনা ও বনা সোবার ঘর। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. কামরুজ্জামান খান বাদি হয়ে বাগেরহাট মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট মর্গে প্রেরণ করেছে।

নিহত মিনা বেগমের কন্যা জেএসসি পরীক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার কনা (১৩) ও ছোট কন্যা চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী ফাতেমা আক্তার বনা (১০) জানায় তার মায়ের সাথে প্রায়ই ঝগড়া পর বাবা কাওসার তার মাকে মারপিট করত।

বেমরতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মিঠু জানান, পুলিশ কনস্টবল কাওসারের পারিবারিক কলহ নিয়ে তিনি একাধিক বার সালিশ বৈঠক করেছেন। যৌতুক লোভী কাওসার পুলিশে চাকরী করলেও তিনি মাদকাসক্ত হিসেবে বেশ পরিচিত ছিল।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাটে এসে তার স্ত্রীকে যৌতুকের দাবিতে পরিকল্পিত ভাবে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে সে পালিয়েছে। তিনি দোষী এই পুলিশ কনস্টবলকে আটক করে এই হত্যাকাণ্ডটি দ্রুত বিচার আইনে পরিচালনার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।

(একে/এএস/নভেম্বর ১৩, ২০১৫)