ঢাবি প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, আমাদের কোনো ক্ষেত্রে হতাশ হলে চলবে না। ১৬ কোটি মানুষের মঙ্গলের জন্য সমাজ থেকে অন্যায়, দুর্নীতি, অনাচার, অবিচার নির্মূলে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হতে হবে।

সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর সি মজুমদার আর্টস মিলনায়তনে ‘নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টার বক্তৃতা-২০১৪’ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টারের উদ্যোগে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এতে ‘অধ্যাপক নাজমুল করিমের সমাজদৃষ্টি’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এমিরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. নেহাল করিম।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক অধ্যাপক ড. নাজমুল করিমের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘তিনি পৃথিবী থেকে বহু আগে বিদায় নিয়েছেন কিন্তু তাঁর স্মৃতি, কর্ম ও সমাজ নিয়ে চিন্তা-চেতনা ও গবেষণা আমাদের মাঝে আজও রয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রবন্ধকার অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী তার গবেষণাধর্মী প্রবন্ধে অধ্যাপক নাজমুল করিমের বিভিন্ন সমাজ বিষয়ক প্রবন্ধ থেকে যেসব সামাজিক চিত্র আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন, তা আমাদের সকলকে নতুনভাবে সমাজ পরিবর্তনে জাগ্রত ও চিন্তাশীল করেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সমাজে যেসব সমস্যা বিরাজমান তা নিরসনের একমাত্র উপায় হচ্ছে শিক্ষা। সর্বত্র শিক্ষার আলো প্রজ্জ্বলন করতে হবে। তা হলেই সমাজ থেকে অশান্তি দূর হবে, সাধারণ মানুষের মুক্তি আসবে এবং তারা সমাজে সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে বসবাস করতে পারবে।’

দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদ এমিরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী তার প্রবন্ধে বলেন, দেশ প্রতীক্ষা করছে একটি মৌলিক সামাজিক পরিবর্তনের, ‘বলা চলে সামাজিক বিপ্লবের। অভিজাত ও তাদের অনুসারীরা এর বিরোধিতা করবে তাদের নিজেদের স্বার্থে। বড়লোক ও ছোটলোকের ভেতর ব্যবধানটা বাড়তে থাকবে এবং ছোটলোকেরা বঞ্চিত ও লাঞ্চিত হবে। এ ব্যবস্থার কোনো বৈধতা নেই। দেশের মঙ্গলাকাঙ্খীদের জন্য কর্তব্য একটাই- পরিবর্তনের পক্ষে কাজ করা।’

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, ‘অল্পসংখ্যক মানুষ সমাজের অধিকাংশ মানুষের ওপর শোষণ-নিপীড়ন চালাচ্ছে। এটা যেমন সত্য ছিল, পরাধীনতার কালে- অর্থাৎ ব্রিটিশ ও পাকিস্তানী শাসনামলে- তেমনি সত্য হয়ে রয়েছে এখনো। ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য কমে নি, বরঞ্চ প্রতিটি ক্ষেত্রে উৎকট ও দৃশ্যমানরূপে তা বৃদ্ধি পেয়েছে। ধনবৈষম্য আগেও ছিল। কিন্তু দীর্ঘ সংগ্রাম ও অনেক পরিবর্তনের পরেও এবং বহু ক্ষেত্রে উন্নতি ও অগ্রগতি সত্ত্বেও এখনো যে সেটা বদলায়নি।’

(ওএস/এস/মে ২৬, ২০১৪)