ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : দিনাজপুর-পঞ্চগড় রেলপথ ঠাকুরগাঁও অফিস এখন নানা কিসিমের দূর্নীতি আর নানা অনিয়মের  স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। এখানে কর্মরত কতিপয় দূর্নীতিবাজ প্রকৌশলী-ঠিকাদার ও দালালচক্র মিলে মিশে একাকার।

চীফ প্রকৌশলী (ঢাকা), ডি ই এন (লালমনি), এ ই এন (দিনাজপুর), পি ডাব্লিউ মোতাহার হোসেন (ঠাকুরগাঁও), ও আই ডাব্লিউ তারেক রহমান (ঠাকুরগাঁও)। এদের সমন্বয়ে রেলপথ উন্নয়ন দেখিয়ে দূর্নীতির মহাশক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, দিনাজপুর-পঞ্চগড় রেলপথ অফিস ঠাকুরগাঁওয়ে।

জানা যায়, দিনাজপুর-পঞ্চগড় মিটারগেজ এই রেলপথটি ডুয়েলগেজ লাইনে উন্নত করা হচ্ছে। এই ডুয়েলগেজ রেলপথে ব্যবহার করা হয়েছে কংক্রিট স্লিপার। ডুয়েলগেজ উন্নত করার পূর্বের, মিটারগেজ রেলপথটি ১শ কিঃ মিটারের মধ্যে ১লাখ ১শত ২৫টি শাল কাঠের স্লিপার ছিল। যার প্রতিটির ওজন নিম্নে ২৫ কেজি এগুলো অকেজো দেখানো হয়েছে। এই স্লিপার গুলো মজুদ করে অকশন না দিয়ে পি ডাব্লিউ মোতাহার হোসেন, ম্যাক্স ও তমা গ্রুপ এই ২টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে ৯০ ভাগ স্লিপার গায়েব করে দিয়েছেন। যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। এখন এই রেল পথে ফেলা হচ্ছে পাথর। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স-এর রেল ষ্টেশন ঠাকুরগাঁও-এ তাদের পাথর মজুদ থেকে রেল কর্তৃপক্ষ পাথর নিয়ে রেল লাইন গুলোতে বসানো হচ্ছে। দেখা গেছে ৩ ওয়াগেন পাথর মজুদ থেকে লাইনে দেওয়ার জন্য নেওয়া হলে ওই ৩ ওয়াগেনের পাথরের মধ্যে ২ ওয়াগেন ফেলে রেখে ওই ওয়াগেন গুলোর মধ্যে ১ ওয়াগেন ভর্তি রেখে পুনরায় মজুদ থেকে ২ ওয়াগেন পাথর নিয়ে কর্তৃপক্ষ ৩ ওয়াগেন পাথর নেওয়া হয়েছে দেখানো হচ্ছে।

১৩ অক্টোবর রাত ১২.৩০ মিনিটে ম্যাক্স-এর লোকজন রেল ওয়াগেনে করে ৩ ওয়াগেন পাথর দেখিয়ে উত্তর দিকে রেল লাইন গুলোতে পাথর নিয়ে যেতে ও ২ ওয়াগেন ফেলে ১ ওগেন নিয়ে আসতে দেখা গেছে। উল্লেখিত পাথর গুলো সেই সময় সরবরাহের নিয়োজিত কোন কর্মকর্তা বা প্রকৌশলিকে দেখা যাই নি।

এ বিষয়ে রেলষ্টেশনের একজন কর্মচারী জানান, নিয়োজিত প্রকৌশলি পি.ডাব্লিউ মোতাহার হোসেন তিনি ম্যাক্স-এর ভাড়া করা প্রমোদ বাসভবনে অবস্থান করছেন। এই গণনাই একের পর এক পাথর সরবরাহ নিচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ । ফলে দিনাজপুর থেকে ঠাকুরগাঁও ১শত কি.মি. রেল পথে যে পাথর সরবরাহের বিল ম্যাক্স ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে তার শতকরা ৩৩ ভাগ অতিরিক্ত বিল করা হয়েছে। এর টাকার পরিমান প্রায় ৩৩কোটি টাকা এবং তা আত্মসাৎ করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে রেল প্রকৌশলি মোতাহার হোসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে তার অফিসে না পাওয়া গেলেও তাকে পাওয়া যায় ম্যাক্স-এর প্রমোদ ভবনে তিনি সেখান থেকে মোবাইলে জানান, উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে তিনি তার দায়িত্ব পালন করছেন।

রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঠাকুরগাঁওয়ে এসে ম্যাক্স এর প্রমোদ ভবনে দিন ও রাত্রি কাটিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ফিরে যান বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।


(এফআইআর/এসসি/নবেম্বর১৫)