মাদারীপুর প্রতিনিধি : ২৫ নভেম্বর মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে এক রক্তক্ষয়ী সম্মুখ যুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে শিবচরকে হানাদার মুক্ত করেছিল। এ যুদ্ধে চারজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এদের মধ্যে ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও সদরপুর উপজেলার দুই কমান্ডার নিহত হন।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের মে মাসে দুদফা হানাদার বাহিনী স্থানীয় রাজাকার দোসরদের নিয়ে শিবচরের ৪০জন নিরীহ নারী পুরুষকে হত্যাসহ ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করে ও স্থানীয় থানায় ঘাটি গড়ে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে মুক্তিযোদ্ধারা শিবচর বাজারে অবস্থিত হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প গুড়িয়ে দেয়।
এরপর থেকেই হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা শিবচর থানায় অবস্থান নিয়ে খুন, ধর্ষণ, লুট, জ্বালানো-পোড়ানো বাড়িয়ে দেয়।

২৪ নভেম্বর রাত ৩টায় এরিয়া কমান্ডার মো. মোসলেমউদ্দিন খানের নেতৃত্বে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ ভাঙ্গা ও সদরপুর থানার মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের আশ্রয়স্থল শিবচর থানা হানাদার মুক্ত অপারেশন শুরু করেন। চারটি গ্রুপ ভাগ হয়ে ১৭৫ জন মুক্তিযোদ্ধা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

প্রায় ১৬ ঘণ্টা স্থায়ী যুদ্ধ ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় হানাদার ও রাজাকার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। সম্মুখ এ যুদ্ধে শিবচরের আ. ছালাম, ভাঙ্গার মোশাররফ হোসেন, সদরপুরের দেলোয়ার হোসেন ও সহযোগী ১১ বছর বয়সের কিশোর ইস্কান্দারসহ চারজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। আরো অনেকে গুরুতর আহত হন। যুদ্ধে ১৮ জন ঘাতক হানাদার ও রাজাকার নিহত হয়। মাদারীপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. শাহজাহান হাওলাদার বলেন, ‘শিবচরে মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথা বর্তমান প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও শিবচর মুক্ত দিবস পালন করে আসছে মুক্তিযোদ্ধাসহ উপজেলার সর্বস্থরের মানুষ। দিনটি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসুচি হাতে নেওয়া হয়েছে। সকালে শিবচরে র‌্যলি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

(এএসএ/এএস/নভেম্বর ২৫, ২০১৫)