আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : অর্থাভাবে গ্যাংরিনে (হাতে-পায়ে পচন) আক্রান্ত জেলার গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা কালু খানের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে এখন মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গন কাঁপানো যোদ্ধা কালু খান (৭০) জীবন যুদ্ধে আজ পরাজিত সৈনিক। তার তার দু’পায়ে পচন ধরে ঝড়ে পড়েছে উভয় পায়ের আঙ্গুলগুলো।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাকে বাঁচাতে হলে দুটি পা দ্রুত কেটে ফেলতে হবে। এ জন্য প্রচুর টাকার প্রয়োজন। অসহায় এ পরিবারের পক্ষে চিকিৎসার টাকা যোগার করা অসম্ভব হয়ে পড়ায় এখন মৃত্যুর প্রহর গুনছেন মুক্তিযোদ্ধা কালু খান।

জানা গেছে, গৌরনদী উপজেলার পিঙ্গলাকাঠী গ্রামের মৃত ইয়াসিন খানের পুত্র কালু খান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে দেশ রক্ষার জন্য নিজের জীবন বাজি রেখে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

তিনি ভারতের বিহারে প্রশিক্ষণ গ্রহন করে এলাকায় ফিরে মুক্তিযুদ্ধের ৯নং সেক্টরের গ্রুপ কমান্ডার নিজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে একাধিক সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বীরত্বের ভূমিকা পালন করেন। দক্ষতার সাথে তিনি (কালু খান) এসএলআর, এসএমজিসহ আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র চালিয়ে যুদ্ধ ক্ষেত্রে বেশ সুনাম অর্জন করেন। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে তিনি ক্ষুদ্র ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। জমাজমি না থাকায় নলচিড়া গুচ্ছ গ্রামে (সরকারি আবাসন এলাকায়) পরিবার পরিজন নিয়ে তিনি বসবাসের সুযোগ পান।

মুক্তিযোদ্ধা কালু খান জানান, ৩ মাস আগে তার দু’পায়ে পঁচন ধরে এবং উভয় পায়ের সবকটি আঙ্গুল ঝড়ে পরে। কয়েকদিন আগে চিকিৎসার জন্য তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন তাকে বাঁচাতে হলে তার উভয় পায়ের হাটুর নিচ পর্যন্ত কেটে ফেলতে হবে।

এ জন্য কমপক্ষে ২ লাখ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা কালু খানের অসহায় পরিবারের পক্ষে এতো টাকা যোগার করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই তিনি (মুক্তিযোদ্ধা কালু খান) উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে বাঁচার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিত্তবানদের সহযোগীতা কামনা করেছেন।

(টিবি/এএস/নভেম্বর ২৫, ২০১৫)