মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাত্র ১১ মাস নার্গিসের বিয়ে হয়েছে। হাতে মেহেদীর দাগ মুছে যায়নি এখনো। কিন্তু যৌতুকের দাবিতে নিমর্মভাবে জীবন দিতে হলো তাকে। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে নার্গিস চলে গেল না ফেরার দেশে।

বুধবার রাতে মাদারীপুর সদর উপজেলার হাজরাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার সকালে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে মাদারীপুর মর্গে লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এমন অভিযোগ নিহত নার্গিসের পরিবারের।

নিহত গৃহবধুর ভাই সুজন ও চাচা ফারুক মাতুব্বর শুক্রবার দুপুরে অভিযোগ করে জানান, চলতি বছর জানুয়ারী মাসে একই উপজেলার চরবাজিতপুর গ্রামের বাবু মাতুব্বরের মেয়ে নার্গিস আক্তার (২২) এর সাথে পাশের হাজরাপুর গ্রামের সামচু খাঁর ছেলে দুবাই প্রবাসী সান্টুর বিয়ে হয়।

বিয়ের সময় নগদ টাকা স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৪ লাখ টাকার মালামাল দিয়ে দেওয়া হয় সান্টুকে। কিন্তু সান্টু ও তার পরিবারের লোকজন আরো আড়াই লাখ টাকা যৌতুকের জন্য নার্গিসকে নির্যাতন করতে থাকে। ছুটি শেষে সান্টু দুবাই চলে গেলেও তার পরিবার যৌতুকের আড়াই লাখ টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে।

হত্যার এক সপ্তাহ আগে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নার্গিসকে যৌতুকের টাকা নিয়ে আসার জন্য তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু নার্গিস খালি হাতে ফেরত আসায় বুধবার রাতে যৌতুকের টাকার দাবীতে নার্গিসের উপর সারারাত নির্যাতন চালায় শ্বশুরবাড়ীর লোকজন।

নির্যাতনের এক পর্যায়ে নার্গিস মারা গেলে বাড়িতে লাশ রেখে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ বৃহস্পতিবার সকালে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মাদারীপুর মর্গে পাঠায়। শুক্রবার দুপুরে তার ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়।

চরমুগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সাব-ইন্সপেক্টর বিশ্বজিত বলেন, লাশের সুরতহাল করা হয়েছে। তাতে নিহত গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. শশাংক চন্দ্র ঘোষ বলেন, গৃহবধূর লাশ ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এ মুর্হূতে মন্তব্য করা সম্ভব নয়।

মাদারীপুর মডেল থানার ওসি জিয়াউল মোর্শেদ বলেন, এ ব্যাপারে থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্টে হত্যার আলামত পাওয়া গেলে হত্যা মামলা নেওয়া হবে।

(এএসএ/এএস/নভেম্বর ২৭, ২০১৫)