মাদারীপুর প্রতিনিধি : দীর্ঘ এক বছর ধরে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কড়াইবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৮৯ জন ছাত্র-ছাত্রীর পাঠদান চলছে পার্শ্ববর্তী গ্রামের রবির বাজার দুর্গা মন্দিরের একচালা বারান্দায়।

বিদ্যালয়, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৮ সালে স্থাপিত এ বিদ্যালয়টি একটি দো‘চালা ঘরে শুরু হয়। ১৯৯৩ সালে ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন ভবন নির্মিত হয়। কিছুদিন যেতে না যেতেই বৃষ্টির পানি পড়তে থাকে। সেই সাথে প্লাস্টার খুলে পড়তে থাকে।

এক পর্যায়ে ২০১৩ সালে বিদ্যালয় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ২০১৪ সালে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের প্রাণ রক্ষায় ও পাঠদানের সুবিধার্থে ভবন ছেড়ে প্রায় ৯০০ ফুট দূরে পার্শ্ববর্তী লখ-া গ্রামের রবির বাজার দুর্গা মন্দিরের একচালা খোলা বারান্দায় পাঠদান শুরু করে।

খোজ নিয়ে আরো জানা যায়, বর্ষা মৌসুমের সময় বন্যার পানিতে মন্দিরের বারান্দার মেঝে তলিয়ে যায়। বেঞ্চে বসলে পা রাখতে হয়েছে পানিতে অথবা কাদায়। তারপরও একই জায়গায় গাদাগাদি করে বসে এভাবেই পাঠদান চলেছে। শীত মৌসুমে এই বিদ্যালয়টি ঠিক না করলে শিক্ষার্থীরা আরো বেশি সমস্যায় পড়বেন বলে জানা যায়।

এছাড়াও ৪ জন শিক্ষক একই জায়গায় পাশাপাশি বসে ৫টি শ্রেণীর ১৮৯ জন ছাত্রছাত্রীকে পাঠদান দিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র কার্তিক জানায়, একই সঙ্গে একই জায়গায় গাদাগাদি করে বসে ও একই সঙ্গে পাঠদান দেয়ায় অনেক সময় স্যারদের কথা ঠিকমতো বুঝতে পারি না।

প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ রায় জানান, বেঞ্চ, চেয়ার, টেবিলের সংকট তীব্র, আলমিরার অবস্থাও শোচনীয়। চরম ভোগান্তির মধ্য দিয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিতে হচ্ছে। এখানে নেই কোনো শৌচাগার। একমাত্র মহিলা শিক্ষক শিলা সেন জানান, এখানে শৌচাগার না থাকায় মেয়ে শিশুদের দুরবস্থা অবর্ণনীয়। প্রায়ই আশপাশের বাড়ি ঘরে গিয়ে বাথরুমের কাজ সারতে হয়।

স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্রীকান্ত ঢালী জানান, নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হলেও আজও কোনো সুরাহা হয়নি।

রাজৈর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান জানান, স্কুলটির নতুন ভবন নির্মাণের প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

(এএসএ/এএস/নভেম্বর ২৭, ২০১৫)