নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলের স্বভাব কবি বিপিন সরকার বার্ধক্যজনিত কারণে পরলোকগমন করেছেন। শুক্রবার বিকালে পৌরসভার বাহিরডাঙ্গায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে ও তিন কন্যাসহ আত্মীয়-স্বজন ও অসংখ্যা ভক্ত রেখে গেছেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, স্বভাব কবি বিপিন সরকার আটটি কাব্যগ্রন্থ, ২০টি অষ্টক যাত্রাপালা, ১৪টি পালা গান, এক হাজারের বেশি কবিতা, এক হাজার হালুই গান, দুই শতাধিক ধুয়া-বারাসিয়া গান লিখেছেন।

নড়াইলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এই স্বভাব কবির যাত্রাপালা, অষ্টক গান, কবিতা, হালুই গান, ধুয়া-বারাসিয়া গান নৌকার মাঝি, কৃষাণ-কৃষাণীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে অত্যন্ত জনপ্রিয়। জেলার অধিকাংশ সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে তিনি আমন্ত্রণ পেতেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্বরচিতা কবিতা আবৃত্তি করে দর্শকদের মুগ্ধ করতেন না ফেরার দেশে চলে যাওয়া এ কবি।

তিনি ১৯৯৮ সালে চিত্রা থিয়েটার পদক, ২০০৩ সালে এ্যাডভোকেট এম বদরুল আলম স্মৃতিপদক, ২০০৮ সালে কবিতায় অবদানের জন্য দক্ষিণ বাংলা সাহিত্য পদক, ২০১০ সালে লোককবি বিজয় সরকার স্মৃতি পদকসহ একধিক পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন। বাংলা ১৩শ ৩০ সনের ৫ পৌষ নড়াইল পৌর এলাকার বাহিরডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

কবি বিপিন সরকারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে নড়াইলের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। মৃত্যুর খবর শুনে তাকে একনজর দেখতে সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ভক্ত ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ কবির বাড়িতে ছুটে আসেন।

তার মৃত্যুতে নড়াইলের চিত্রা থিয়েটারের সভাপতি প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমান, জারি সম্রাট অধ্যক্ষ রওশন আলী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক রবিউল ইসলাম, নড়াইল সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক মলয় কুন্ডু ও সদস্য সচিব শরফুল আলম লিটু, বিজয় ফাউন্ডেশনের যুগ্ম-আহ্বায়ক আকরাম শাহীদ চুন্নু, মূর্ছনা সঙ্গীত নিকেতনের অধ্যক্ষ গোলক চন্দ্র বিশ্বাস শোক প্রকাশ এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

তিনি বলেন, স্বভাব কবি বিপিন সরকারের মৃত্যুতে আমরা একজন গুণী কবি-সাহিত্যিককে হারালাম। বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান, চারণ কবি বিজয় সরকারের সমসাময়িক এই স্বভাব কবি বিপিন সরকারের মৃত্যুতে নড়াইলে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যে শূন্যতার সৃষ্টি হলো তা পূরণ হবার নয়।

(টিএআর/এএস/নভেম্বর ২৮, ২০১৫)